ঢাকা | সোমবার
১৯শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাল খননের আড়ালে পাথর উত্তোলন

খাল খননের আড়ালে পাথর উত্তোলন

নীলফামারীর ডিমলায় তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রধান খাল সিলটাপ খননের নামে বোমা (শ্যালো) মেশিন বসিয়ে চলছে পাথর উত্তোলন। নিয়মের বাইরে সিলটাপের তলদেশে গভীর খাদ করে পাথর উত্তোলন করায় ভেঙ্গে পড়েছে পাড়। প্রতিদিন বিক্রি হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার পাথর।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও পানির উন্নয়ন বোর্ডের যোগসাজশের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থ বছরে নদী খাল পুকুর খনন প্রকল্পের আওতায় তিস্তার সিলটাপ সহ ৪টি পুকুর খনন  কাজ শুরু করেছে ডালিয়া পাউবো।২ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে হাছিবুল ট্রেডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ সম্পন্ন করেননি ঠিকাদার।

দেখা যায়, ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজের পাশেই নদীর ধারে তিস্তা সেচ প্রকল্পের প্রধান খাল সিলটাপ খনন করছে  ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ড্রেজার ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও তা না মেনেই বোমা (শ্যালো) মেশিনের মাধ্যমে খনন করছে প্রতিষ্ঠানটি।একই স্থানে পাশাপাশি ১৯টি অবৈধ শ্যালো মেশিন ব্যবহার করে ভূ-গর্ভস্থ পাথর উত্তোলন করে অবৈধভাবে বিক্রি করছে।খনন করা পলিমাটি ও বালুগুলো ফেলা হচ্ছে সিলটাপের পাড়েই। যা বর্ষার মৌসুমে বৃষ্টির পানির সঙ্গে আবারো সিলটাপে গিয়ে পড়ছে। এতে একদিকে যেমন সরকারের কোটি টাকা নদীর পানিতে ভেসে যাবে , অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্থ হবে ফসলি ডালিয়া ব্যারেজ,জমি,পার্শ্ববর্তী গ্রাম ও তিস্তা সেচ প্রকল্প।এছাড়াও মোটা অঙ্কের টাকায় খননের বালুতে ভরাট করা হচ্ছে ব্যাক্তিগত পুকুর ও ডোবা।

নুর রহমান, রিপনসহ বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, দায়সাড়া খনন কাজ করছে পাউবো ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গতবছর বোমা মেশিন দিয়ে খনন করায় এবার বর্ষা মৌসুমে সিলটাপের পাড়সহ সিসি ব্লক ধসে পড়েছে।ফলে মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে তিস্তা সেচ প্রকল্প।এতে যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে সেচ প্রকল্পের প্রধান খাল সিলটাপ বলে জানান তারা।

“তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও” সংগ্রাম পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য সোহেল হাসান জানান, শ্যালো মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করলে তা হবে আত্মঘাতী ।যা সেচনালার পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। বিশেষ করে যে গভীরতা নির্ধারণ করা হয়েছে তা পরিকল্পনা অনুযায়ী বাস্তবায়ন করতে পারবে না। ফলে চারপাশ থেকে বালুর স্তর ভেঙে তলদেশ ভরাট হয়ে যাবে।নদী খাল খননে সরকারি নির্দেশনা না মানলে তা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।

ডালিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদদৌলা জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয়রাই পাথর উত্তোলন করছে। ইতিমধ্যে খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, সিলটাপে ড্রেজার মেশিন প্রবেশ করার কোনো উপায় না থাকায় বোমা মেশিন দিয়েই খনন কাজ করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে রংপুর পাউবো বিভাগের তথ্যাবধায়ক প্রকৌশলি আবু তাহের বলেন, ড্রেজিং কাজের জন্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে খনন কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি বিষয়টি নিয়ে ডালিয়া পাউবোর  দায়িত্বরত প্রকৌশলীর সাথে কথা বলবেন বলে জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন