ঢাকা | বুধবার
৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ুবিদ্যুতে এগিয়ে চীন-ভারত

বায়ুবিদ্যুৎ
  • পর্যায়ক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স
  • বিশ্বে একক বৃহত্তম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নেদারল্যান্ডসে
  • প্রায় ৮৫ বর্গকিলোমিটারে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা

কেবল বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিশ্বে ২০১৮ সালে উৎপাদিত হয়েছে মোট প্রায় ৬০০ গিগাওয়াট ক্ষমতার বাণিজ্যিক বিদ্যুৎশক্তি। ভূতাত্ত্বিক গঠন এবং ভৌগোলিক অবস্থান নিরিখে কোন দেশ কী পরিমাণ বিদ্যুৎ কোন ধরনের নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদন করবে, তা নির্ধারণ করার সুযোগ পায়। দ্য ওয়ার্ল্ড উইন্ড এনার্জি কাউন্সিলের প্রকাশিত ২০১৮ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, কেবল ২০১৭ সালে পৃথিবীতে ৫১ দশমিক ৩ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সামর্থ্য (স্থলভাগ ও সমুদ্রবক্ষে) স্থাপন করা হয়েছে।

নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সৌরশক্তি ও বায়ুশক্তি প্রধান অবলম্বন। এখন পর্যন্ত বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীন সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। এরপর পর্যায়ক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ভারত, স্পেন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ব্রাজিল, কানাডা ও ইতালির অবস্থান। ভারতে বায়ুশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের স্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৩৫ গিগাওয়াট। ২০২২ সাল নাগাদ ভারত সরকার বায়ুশক্তি কাজে লাগিয়ে প্রায় ৬০ গিগাওয়াট পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে চায়। সমুদ্রবক্ষে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা পৃথিবীতে এখন কম নয়।

চীনের শেনকুয়ান-১ তেমনি এক বিদ্যুৎকেন্দ্র, যা সমুদ্র উপকূলে ৪৬ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় ৭৩টি উইন্ড টারবাইন থেকে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষম। যুক্তরাজ্যের নর্থ সি উপকূলে প্রায় ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ২০১২ সালে স্থাপিত হয়েছে ৫০৪ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতার ১৪০টি উইন্ড টারবাইন। নেদারল্যান্ডসের সমুদ্র উপকূলে প্রায় ৮৫ বর্গকিলোমিটার বিস্তৃত এলাকায় স্থাপিত ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার জেমিনি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রটি এখনো এককভাবে বৃহত্তম বায়ুশক্তিচালিত সচল বিদ্যুৎকেন্দ্র।

যেহেতু বায়ুপ্রবাহের গতির ওঠানামা উইন্ড টারবাইনের বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রভাব ফেলে, সে কারণে নবায়নযোগ্য বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে হলে অন্যান্য উৎস থেকে বিদ্যুৎশক্তি দ্রুত সরবরাহের দক্ষ সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থা গড়তে হয়। নতুন প্রযুক্তির বিকাশ, মানুষের ক্রয়ক্ষমতার উন্নতি ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানিনির্ভর বিদ্যুৎশক্তির বর্ধিত ব্যবহার সে কারণে জনপ্রিয় হচ্ছে।

ভারত নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ২০৩০ সালের ৪৫০ গিগাওয়াটে নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। বর্তমানে যা রয়েছে ৮৬ গিগাওয়াট। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ছাদে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনে উৎসাহ বাড়াতে ভুর্তুকিও দেওয়া হচ্ছে। আর যুক্তরাজ্যে ২০২০ সালে মোট উৎপাদনের ৪২ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য থেকে এসেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি ৬৫ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য রয়েছে। এর জন্য দীর্ঘ মেয়াদে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে ৮০ থেকে ৯৫ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে নিতে চায় জার্মানি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন