নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে পালানোর সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহি ইউনিয়নের গাংচিল এলাকায় ২০ রোহিঙ্গাকে আটক করে স্থানীয় লোকজন। আটককৃত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৫ পুরুষ, ৪ নারী ও ১১ জন শিশু ছিলো। পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের জিম্মায় থাকা রোহিঙ্গারা পালিয়ে যায়। রোহিঙ্গা পালানোর ঘটনায় স্থানীয় ইউপি সদস্য (মেম্বার) আবদুল হক জড়িত বলে অভিযোগ করছে স্থানীয় লোকজন, যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে মেম্বার। পুলিশ বলছে, পলাতক রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।
গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে কিল্লার বাজার সংলগ্ন নামার বাজারের সেলিম মাঝির ঘর থেকে পালিয়ে যায় রোহিঙ্গারা। এরআগে রবিবার রাত ১২টার দিকে গাংচিলের কিল্লার বাজারে ঘুরতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হলে তারা রোহিঙ্গাদের আটক করে।
জানা গেছে, রবিবার রাতে আটককৃত রোহিঙ্গার দালালের মাধ্যমে নৌকাযোগে ভাসানচর আশ্রয়ণ থেকে পালিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হয়ে আসে। পথে রাত ১২টার দিকে দালালরা কৌশলে তাদের গাংচিল ঘাটে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। পরে রোহিঙ্গারা কিল্লার বাজারে এসে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করলে স্থানীয় সেরাজুল, রুবেল, সাত্তার মাঝি সহ কয়েকজন তাদের আটক করে এবং রোহিঙ্গা বলে নিশ্চিত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে অবগত করে। পরবর্তীতে আবদুল হক মেম্বারের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় সেলিম মাঝি নামের এক ব্যক্তির ঘরে আটককৃত রোহিঙ্গাদের রাখা হয়। সোমবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে আবদুল হক মেম্বারের সহযোগিতায় আটককৃত ২০ রোহিঙ্গা পালিয়ে গেছে বলছেন স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, এতজন রোহিঙ্গা এক সাথে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি উদ্বেগজনক। রোহিঙ্গারা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে গেলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িয়ে পড়বে তারা। তাদের পুনঃরায় আটক করার দাবি স্থানীয়দের।
অভিযোগের বিষয়টি ভিত্তিহীন দাবী করে ইউপি সদস্য আবদুল হক বলেন, কিছু কূচক্রিমহল আমার বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা ছেড়ে দিয়েছি বলে অপপ্রচার করছে। রোহিঙ্গা আটকের খবর পেয়ে আমি সকালে ঘটনাস্থলে যাই। পরবর্তীতে কাশেম ছকিদারকে সেখানে রেখে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির নির্দেশে রোহিঙ্গাদের পুনঃরায় ভাসানচর পাঠানোর জন্য ট্রলার ভাড়া করতে যাই। ট্রলার ভাড়া করে এসে দেখি রোহিঙ্গারা নেই। স্থানীয় লোকজনের ভিড়ের মধ্যে পুলিশ আসার আগে তারা একজন একজন করে পালিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি রোহিঙ্গা পালানোর ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান রোহিঙ্গা পালানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগে রোহিঙ্গার পালিয়ে যায়। স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ওই ওয়ার্ডের মেম্বারকে পুলিশকে সহযোগিতা করে রোহিঙ্গাদের পুনঃরায় আটক করতে বলা হয়েছে।