ঢাকা | শুক্রবার
২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খরতাপে পুড়ছে পাহাড়

খরতাপে পুড়ছে পাহাড়
  • দিনে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন

গরমে সবুজে ঘেরা মানুষ অতিষ্ঠ খাগড়াছড়ি জেলার মানুষ। খরতাপে মানুষ পুড়ছে তীব্র রোদে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে লোডশেডিং। গত চারদিন ধরে তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে পাহাড়ের মানুষ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। এলাকাভেদে ১ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ থাকে। এভাবে বিভিন্ন এলাকায় চলছে লোডশেডিং। দুর্গম এলাকার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ পাহাড়ের মানুষরা জনগণ। এদিকে প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কম হওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ঘটনা ঘটছে বলছেন খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ।

সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, লোডশেডিং সন্ধ্যার পর মানুষ বেশি ভোগান্তিতে পড়ে। মোমবাতি জ্বালিয়ে রেস্টুরেন্টে চালাচ্ছেন দোকানিরা। টেইলার্সের নারীরা মোম জ্বালিয়ে কাপড় সেলাই করছেন। সন্ধ্যার পর খাগড়াছড়ি মোমের আলোয় একমাত্র ভরসা হয়ে উঠছে। শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ড অন্ধকারে মানুষ চলাচল করছে।

শহরের পানখাইয়াপাড়া এলাকার মংম্রাগ্য মারমা, থুইম্রাচিং মারমা, রিপ্রুচাই মারমা, উমাপ্রু মারমা বলেন, গরম সাথে রোডশেডিং। পানি পাই না। প্রচন্ড গরমে রাতে মানুষ স্বস্তিতে ঘুমাতে পারে না। গরমে শিশুদের খুবই খারাপ অবস্থা। পড়া-শুনা করতে পারছে না। রোডশেডিং দুর্বিসহ জীবনযাপন।

মহিলা কলেজ সড়কের রাজ্যমনিপাড়ার কলেজ পড়ুয়া বিজয় সেন বলেন, অসহ্য গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। বিদ্যুৎ যেনো আজ অতীতকে মনে করিয়ে দেয় এই আছি এই নেই। শিক্ষার্থীরা পড়া-শুনা করতে পরছে না। অতিষ্ঠ লোডসেডিং থেকে মানুষ বাঁচতে চায়।

শহরের খেজুরবাগান এলাকার বাসিন্দা সুমন বড়ুয়া বলেন, একটা সময় লোডশেডিংয়ের মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হতো। কিন্তু বর্তমানে ৩২ কেবি সাবস্টেশন স্থাপনের ফলে সেই ভয়াবহ দুর্ভোগ হতে খাগড়াছড়িবাসী নিস্তার পায় জনমনে স্তস্তি ফিরে আসে। কিন্তু ইদানিংকালে আবার পূর্বের মতো মারাত্মক লোডশেডিং আরাম্ব হওয়ায় মানুষ ঘরবাড়ি কিংবা অফিস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবজায়গায় অবর্ননীয় বিদ্যুৎতের লোডশেডিং সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা এর থেকে নিস্তার চাই।

ঠাকুরছড়া এলাকার পুলক ত্রিপুরা বলেন, চার দিন ধরে খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎতের বেহাল অবস্থা। রোডশেডিং সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। সকাল ৮.০০ থেকে ১০.০০ টা। বেলা ১২.০০ থেকে বিকাল ২.০০টা। বিকাল ৪.০০ থেকে সন্ধ্যা ৬.০০ রাত ৮.০০ থেকে  ১০.০০টা আবার ১২.০০ টা হতে রাত ২.০০ টা সময়ের মধ্যে আমার এলাকায় বিদ্যুৎ থাকেনা। অথচ কত স্বপ্ন বিদ্যুৎ বিদ্যুৎদের সাব স্টেশন হলে সেই সমস্যা থাকবেনা। তাই ৩৩ হাজার কিলো ওয়ার্ডের সাব স্টেশন বসানো হলো কিন্তু সেই চাওয়া ও পাওয়া শুধু স্বপ্নই থেকে গেল। নির্ধারন সময় ছাড়া প্রতিদিন যাচ্ছে আর আসতেছে। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ ( বিউবো ) নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের চট্টগ্রাম বিভাগে চাহিদা ১৩শ মেগা ওয়াডেরমত। আমাদের খাগড়াছড়ি সদরের ৫ মেগা ওয়াড কমিয়ে দিয়েছে। ৫ মেগা ওয়াড রোডশেডিং আছে। যার কারণে ১ঘন্টা ১ঘন্টা পর পার করে এবাবে ক্রমনেই চালাচ্ছি। খাগড়াছড়ি জেলাতে চাহিদা ১০ মেগা ওয়াড। আমাকে দিচ্ছে ৫ মেগা ওয়াড। বাকী ৫ মেগা ওয়াড রোডশেডিং করতে হচ্ছে। আমি এখন ৫০ ভাগ চালাতে পারছি। এবাবে আর কত দিন চলবে এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার বলেন, বলতে পারছি না। এটা সেন্টারের ব্যাপার।    

সংবাদটি শেয়ার করুন