প্রতিবছর বিভিন্ন বিভাগে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে শুদ্ধাচার পুরস্কার প্রদান করে থাকে সরকার। পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও সততার নিদর্শনসহ নির্বাচিত কিছু গুণাবলির জন্য এ পুরস্কারের মাধ্যমে দক্ষ কর্মকর্তাদের উৎসাহ দেয়া হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরের ব্যাক্তিগত ক্যাগরিতে শুদ্ধাচার পুরস্কার পেয়েছেন পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) মো. মামুন আল রশীদ।
গতকাল রোববারওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেতে ভার্চুয়ালী অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ প্রদান করেন। এ সময়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী মো: ফরহাদ হোসেন এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (পি, আর এল) ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমের সাথে যৌথভাবে তিনি এ পুরস্কার অর্জন করেন।
সরকারের মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা রাষ্ট্রীয় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত কর্মচারীদের পুরস্কার প্রদানের উদ্দেশ্যে শুদ্ধাচার পুরস্কার নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়। শুদ্ধাচার পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত ১৮টি গুণাবলির মধ্যে রয়েছে- কর্মচারীর পেশাগত জ্ঞান ও দক্ষতা, সততার নিদর্শন স্থাপন করা, নির্ভরযোগ্যতা ও কর্তব্যনিষ্ঠা, শৃঙ্খলাবোধ, সহকর্মীদের সঙ্গে আচরণসহ অন্যান্য বিষয়। শুদ্ধাচার পুরস্কার পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীকে উল্লেখিত সূচকের ১০০ নম্বরের মধ্যে অবশ্যই ৮০ নম্বর পেতে হয়। সিনিয়র সচিব বা সচিবদের মধ্যে এই পুরস্কারের জন্য যোগ্য কর্মচারী নির্বাচন করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে গঠিত বাছাই কমিটি কাজ করে। প্রতিবছর সরকারের শুদ্ধাচার পুরস্কারপ্রাপ্ত কর্মচারীরা পুরস্কার হিসেবে একটি সার্টিফিকেট এবং এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ পেয়ে থাকেন।
পুরস্কার প্রাপ্তির বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সচিব মো. মামুন আল রশীদ বলেন, হঠাৎ করেই কেবিনেট বিভাগ থেকে ফোন করে জানানো হয় আমি ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমার নাম ধরে প্রশংসা করেছেন, চাকরি জীবনে এটিই পরম পাওয়া। সবার কাছে দোয়া চাই, যাতে ভবিষ্যতে দেশের জন্য আরও ভালো কাজ করতে পারি।
মো. মামুন আল রশীদের জন্ম নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার শুকুন্দী গ্রামে। তিনি নটর ডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে স্নাতকোত্তর শেষে চাকরিতে যোগ দেন। পরে যুক্তরাজ্যের আলস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্টে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়া তিনি নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল স্টাডিজ (আইএসএস) থেকে পাবলিক পলিসি বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন।
মো. মামুন আল রশীদ ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) প্রশাসন ক্যাডারের অষ্টম ব্যাচে যোগদান করেন। পরে পাবনা, নেত্রকোনা ও ফেনী জেলায় মাঠ প্রশাসনের কাজ করেন। ১৯৯৯ সালে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন সদস্যের একান্ত সচিব পদে থাকাকালে প্রশাসনিক সংস্কার বিষয়ে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং ২ কন্যা সন্তানের জনক। তার স্ত্রী কাজী জেবুন্নেছা বেগম স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত। কন্যারা অট্রেলিয়ার মেকোয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক অধ্যয়নরত। রুরাল কমিউনিটি ডেভেলপমেন্টের ব্রত নিয়ে তিনি গ্রামের ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার সঙ্গে জড়িত থাকতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তাছাড়া প্রশাসনে তিনি প্রচারবিমুখ একজন সৎ কর্মকতা হিসেবে পরিচিত।
আনন্দবাজার/টি এস পি