ঢাকা | শনিবার
২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাহাড়ে সোনা ব্যাঙ নিধন

পাহাড়ে সোনা ব্যাঙ নিধন
  • ৩ যুবকের দণ্ড, ৩০ কেজি অবমুক্ত

বিশ্ব পরিবেশ টিকিয়ে রাখা উভচর (এ্যম্ফিবিয়াস) প্রাণী ব্যাঙ ইদানীং ঠাহর করতে পারে না প্রকৃতির মতিগতি। জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কা সামলাতে হচ্ছে, শিকারির থাবা থেকে রক্ষা পেতে নিজেকে লুকোতে হচ্ছে। আষাঢ়ের প্রথম বৃষ্টিতে যৌবন আসে ব্যাঙের। নবধারা জলের সঙ্গিনীর আদর পেতে ডাকে সোনা ব্যাঙ। ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর সুর তোলা হলুদ বরণ গায়ক দলের কণ্ঠ আজ রুদ্ধ। বৃষ্টিভেজা রাতে জলাশয়ে এমন সুর শোনা যায় না। অন্তরা চৌধুরীর কণ্ঠে কোলা ব্যাঙ ও সোনা ব্যাঙ গানের একাংশে আছে, ‘সম্মেলনে গাইবেন খাঁ সাহেব কোলা ব্যাঙ, সঙ্গত করবেন পন্ডিত সোনা ব্যাঙ….’ এ পন্ডিত ব্যাঙ লুকিয়ে বেড়াচ্ছে।

এদিকে খাগড়াছড়ির বাজারে সোনা ব্যাঙ বিক্রির অপরাধে তিন যুবককে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শুক্রবার দুপুরে শহরের নিচের বাজার এলাকায় নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট শেখ নওশাদ হাসান এ অভিযান পরিচালনা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো : আইয়ুব আলী (২৮), মো. হৃদয় (২১) ও রুবেল দাশ (২০)। তাদের সকলের বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলা সদরে। তারা পাঁচটি করে ব্যাঙ বেঁধে কেজি দরে বাজারে বিক্রি করেন আসছে।

অভিযানে খাগড়াছড়ি বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোজাম্মেল হোসেন অংশ নেন। তিনি জানান, দুটি ক্যারেটে ১২০টি সোনা ব্যাঙ জব্দ করা হয়েছে। পরে জব্দকৃত ব্যাঙ খাগড়াছড়ি বনশ্রীর প্রাকৃতিক পরিবেশে সন্ধ্যায় অবমুক্ত করেন খাগড়াছড়ি সদর রেঞ্জ অফিসার বাবুরাম চাকমা।

খাগড়াছড়ি সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা বাবু রাম চাকমা বলেন, বন্যপ্রাণী ২০১২ অনুযায়ী আজকে জেলা প্রশাসক ও খাগড়াছড়ি বন বিভাগের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি শহরের নিচের বাজার এলাকায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তিনজন ব্যাঙ বিক্রেতাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদেরকে ছয় মাস করে দণ্ড দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, বন ও পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঙ। জীব বৈচিত্র সংরক্ষণে আমাদের সকলকে সচেতন হতে হবে। প্রকৃতির পরম বন্ধু এসব সোনা ব্যাঙ অবমুক্ত করা হলো। যা আমাদের ফসল উৎপাদন থেকে শুরু করে বন ও পরিবেশের জন্য সহায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ।

জানা যায়, পাহাড়ের প্রাকৃতিক ও মানুষের শিকারের কারণে ব্যাঙের প্রজননক্ষেত্র মারাক্তকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাঙ। ব্যাঙের বাসস্থান, খাদ্য ও সংরক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় ব্যাঙের বিচরণক্ষেত্র সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন