আশুলিয়া শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত জিতু ওই স্কুল কমিটির সভাপতি হাজী হযরত আলীর মিয়া নাতি। আর জিতুর বাবার মামাতো ভাই মারুফ আলী সুমন স্কুলটির পরিচালক। নানা সভাপতি ও মামা পরিচালক হওয়ার কারনে স্কুলের অনান্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সাথে প্রভাব দেখাতো সে। চলাফেরাও ছিল বখাটে স্বভাবের। এলাকায় ছিল নিজের একটি কিশোর গ্যাং গ্রুপ। স্কুলের একাধিক শিক্ষক ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
হাজী ইউনুছ আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক শিফকুল ইসলাম বলেন, জিতু বখাটে স্বভাবের ছেলে ছিল। স্কুলের নিয়ম কানুন সে ঠিকমতো মানতো না। আর শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ছিলেন উৎপল কুমার সরকার। এসব বিষয় নিয়ে সে একাধিকবার বুঝিয়েছেন। না পেরে স্কুুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও দেন তিনি। সে কারনেই জিতু তার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এই হত্যাকান্ড ঘটায়।
স্কুলের একাধিক শিক্ষক বলেন, মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলার সময় হঠাৎ করেই মাঠ থেকে স্ট্যাম্প নিয়ে জিতু ওই শিক্ষককে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। এসময় তাকে আটক করা হলেও তার বাবা এসে প্রভাব দেখিয়ে তাকে স্কুল থেকে নিয়ে যায়। জিতুর নানা স্কুলের ম্যনেজিং কমিটির সভাপতি ও মামা পরিচালক হওয়ার কারনে তিনি এই প্রভাব দেখান বলেও অভিযোগ করেন ওই শিক্ষক।
স্কুলের একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, নানা সভাপতি ও মামা পরিচালক হওয়া স্কুলে জিতু অনান্য শিক্ষার্থীদের সাথে প্রভাব দেখাতো। সহপাঠীদের সাথে মঝে মধ্যেই খারাপ আচারনও করতো সে। এছাড়াও স্কুলের একটি মেয়েদের উত্যাক্ত করতো জিতু। উৎপল স্যার একটি মেয়েকে উত্যাক্ত করার ঘটনা জিতুর মামার কাছে জানিয়ে দেয়। সে কারনে জিতু ওই স্যারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এই ঘটনা ঘটায়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, স্কুলের মতো এলাকায়ও জিতু বেপোয়ারা চলাফেরা করতো। এলাকার মেয়েদের উত্যাক্তও করতো জিতু। জিতুর নেতৃত্বে একদল কিশোর গ্যাং ছিলো বলে জানায় তারা।
এদিকে এই ঘটনায় জিতুকে ৪৮ ঘন্টার ভেতরে গ্রেফতার ও তার পরিবারের সদস্যদেরও আইনের আওতায় আনার দাবী জনিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা । তাদের সাথে আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করে। দ্রুত জিতুকে গ্রেফতার না করা হলে আরো কঠোর কর্মসুচির হুশিয়ারী দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, শিক্ষক হত্যার ঘটনার পর থেকেই ওই ছাত্র আত্নগোপনে রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের জন্য আশুলিয়া থানা পুলিশের কয়েকটি দল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত ওই ছাত্রকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।