ঢাকা | শনিবার
২৫শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিরাপদ পানির সংকট তীব্র

দেশে নিরাপদ পানির বাইরে এখনো ৪১ শতাংশ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ মানুষের বসবাস। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি ২০৩০বাস্তবায়নে মাত্র ৮ বছর সময় হাতে রয়েছে।
  • নিরাপদ পানি বঞ্চিত ৪১ শতাংশ মানুষ
  • স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনে ৬১ শতাংশ

দেশে নিরাপদ পানির বাইরে এখনো ৪১ শতাংশ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে ৬১ শতাংশ মানুষের বসবাস। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি ২০৩০বাস্তবায়নে মাত্র ৮ বছর সময় হাতে রয়েছে। এই সময়ের মধ্যেই এসব খাতে উন্নয়ন করতে হবে বলে জানিয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান।

তিনি বলেন, এখানে নীতি সহায়তা এবং অর্থায়ন ও বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে ওয়াসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিশ্চিত করতে হবে।

২০২১-২২ অর্থবছরে ওয়াশখাতে বরাদ্দ ছিল ৫.৪৪ শতাংশ, সেটি আরও বাড়াতে হবে। কেননা সরকারি হিসেবে ৫৯ শতাংশ নিরাপদ পানি ও ৩৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। সে হিসেবে নিরাপদ পানির ক্ষেত্রে ৪১ শতাংশ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের বাইরে ৬১ শতাংশ মানুষের বাস।

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তোলা হয়। ওয়াটার এইড, পিপিআরসি, খানসা-বিডি, এফএসএন নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিসটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পোডাটি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, ইউনিসেফ ও ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল নামের কয়েকটি সংগঠন যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে কিছু সুপারিশ তুলে ধরে বলা হয়, এসডিজি ৬.১.১ এবং এসডিজি ৬.২.১ অর্জন নিশ্চিতে বরাদ্দ বাস্তবায়নে মানসিকতার পরিবর্তন এবং কার্যকর এডিপি প্রকল্প নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। অত্যন্ত প্রত্যন্ত এলাকায় বরাদ্দ বাড়ানো ও আন্তঃশহর বরাদ্দের ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিবেচনা করা উচিত। শহরাঞ্চলে স্বাস্থ্যবিধি এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ বাজেট বৃদ্ধিতে বিনিয়োগ করতে হবে।

বক্তারা বলেন, প্রান্তিক কমিউনিটির মানুষের জন্য আসন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতের বরাদ্দ যথেষ্ট নয়। বরাদ্দ কম হওয়ার ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো ধীরগতিতে বাস্তবায়িত হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে আঞ্চলিক বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে কিছু ইতিবাচক প্রবণতা রয়েছে। হাওর এবং পার্বত্য এলাকায় বরাদ্দ কিছুটা বেড়েছে। তবে চর এবং উপকূলীয় এলাকায় বরাদ্দ বাড়েনি। এ ধারাটি উপকূলীয় অঞ্চল ও চরে বসবাসকারী মানুষের জন্যও যথাযথভাবে অব্যাহত রাখা উচিত, যাতে করে কেউ যেনো পিছিয়ে না পড়ে। তাই প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়টি নিবিড়ভাবে পুনর্বিবেচনা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত। ইতোমধ্যে শহরাঞ্চলের মধ্যে বাজেট বরাদ্দের বৈষম্য এখনো বিরাজমান রয়েছে। ওয়াশ এডিপিতে স্থানিক বৈষম্য দূরীকরণ করার জন্য তারা সুপারিশ করেন।

এফএসএম খাতের বরাদ্দ হ্রাসের বিষয়টি দেশজুড়ে স্যানিটেশন কাভারেজ বৃদ্ধির বিষয়টিকে বাধাগ্রস্ত করবে। হাইজিন খাতে কিছুটা বরাদ্দ বৃদ্ধির বিষয়টি নিঃসন্দেহে ইতিবাচক একটি পদক্ষেপ। তবে শুধুমাত্র স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এর বাস্তবায়ন করলে পুরো দেশজুড়ে ওয়াশ খাতের কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করা সম্ভব হবে না।

তারা ওয়াশখাতের আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য এ বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করার সুপারিশ করে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় প্রকল্পগুলো নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে মনোযোগী হওয়া এবং গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ওয়াশখাতের বরাদ্দের ব্যবধান ঘোচানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পিপিআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, ওয়াটারএইডের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর হোসেন ইশরাত আদিব ও ওয়াস নেটওয়ার্কের প্রতিনিধিরা।

আরো বক্তব্য রাখেন, ইউনিসেফ বাংলাদেশের মনিরুল আলম, ফানসা বিডির যোসেফ হালদার, এফ এসএম এর প্রতিনিধি আলাউদ্দিন, এমএসএমের প্লাটফর্মের অলক মজুমদার,এসডব্লিউর প্রতিনিধি জুবায়ের হাসান প্রমুখ।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন