কটিয়াদী, বাজিতপুর ও নিকলী উপজেলার সেতুর অভাবে ৯ গ্রামের কয়েক হাজার লোককে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে এবং এ রাস্তায় লোকজন যাতায়াতের একমাত্র বাঁশের সাঁকোই হচ্ছে ভরসা। বাজিতপুর উপজেলার ইন্দুরদাই, কালিকাপুরের পাকা রাস্তাসহ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হলেও ভালো নেই অপর প্রান্তে কটিয়াদী উপজেলার মন্ডলভোগ ও দিনমণি গ্রামবাসী সাঁকো। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ হাজারো মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পশ্চিম মন্ডলভোগ, পূর্ব মন্ডলভোগ, পাড়া মন্ডলভোগ, দিনমণি, হালিমপুর ইউনিয়নের বামনগাঁও, ছয়পাইকা, ইন্দুরদাই, কালিকাপুর ও জারইতলা ইউনিয়নের কাউন্দিয়া গ্রামের লোকজন এ নদীর উপর দিয়ে চলাচল করে থাকেন। স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত সাঁকোটি প্রতিবছর মেরামত করেন নিজেরাই।
গ্রামবাসীরা জানান, এক-দুই দিনের নয়, বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই গ্রামের মানুষকে। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় এ সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীদের। উভয় পাড়ের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসীদের বাজারে যেতে, দূর দূরান্ত থেকে আগত অনেক মেহমানদের সাঁকোতে চড়ার অভ্যাস না থাকাতে এবং ছোট ছোট শিশুরা দীর্ঘ বাঁশের সাঁকো বেয়ে নদী পাড়ি দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়। অনেকেই সাঁকো হতে পড়ে গিয়ে মোবাইল ফোনসহ দামি জিনিসপত্র হারিয়েছেন। এছাড়া গর্ভবতীদের জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে এ নদী পার হয়ে যেতে হয়। পশ্চিম মন্ডলভোগ, পূর্ব মন্ডলভোগ ও দিনমণি গ্রামের পাশ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া একই নদীতে ৫ কিলোমিটারের মাঝে কোনো পাকা সেতু নেই। তবে এর একটি স্থায়ী সমাধান চান এলাকার বাসিন্দারা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকোটি পারাপার হতে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়। অনেক সময় পা পিছলে পানিতে পড়ে বইপত্র নষ্ট ও আহত হয়েছে শিক্ষার্থীরা। ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকোর স্থানে এখনো কোনো কালভার্ট অথবা ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা হয়নি।
একাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সাঁকোটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার পরও শত ব্যস্ততার মাঝেও ছেলে-মেয়েদের এ বাঁশের সাঁকো পার করেই স্কুলে পাঠাতে হয়। কিছুদিন আগেও সম্পূর্ণ ভাঙা ছিল সাঁকোটি। এলাকার কয়েকজন যুবক সংস্কার করে কিছুটা চলাচলের উপযোগী করেছে।
চান্দপুর ইউনিয়নের মন্ডলভোগ গ্রামের হুমায়ুন কবির বলেন, শত বছর যাবৎ খালটির ওপরে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ৯ গ্রামের মানুষের যাতায়াত। সংসদ সদস্য, চেয়ারম্যান, মেম্বাররা পাকা ব্রিজের আশ্বাস দিলেও কেউ ব্রিজটি করে দিচ্ছেন না। আমরা চাই একটি ব্রিজ।
চান্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মাহফুজ দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাসহ ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। বাজেট পাওয়া গেলেই সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।