পদ্মা সেতুর নেপথ্যে ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে সরকারকে কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ৩০ দিনের মধ্যে এ কমিটি গঠন করতে হবে। গঠিত কমিটিকে দুই মাসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এই বিষয়ে আদেশ দেন।
কমিশন গঠন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়া হয়। এর আগে গত সোমবার ষড়যন্ত্র না হলে পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ হলো কেন- এমন প্রশ্ন করেন হাইকোর্ট। পদ্মা সেতু নির্মাণ চুক্তি নিয়ে দুর্নীতির মিথ্যা গল্প সৃষ্টির নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে কমিশন গঠন প্রশ্নে জারি করা রুল শুনানিতে এ কথা বলেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
হাইকোর্ট বলেন, পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটা আমাদের অহংকার। এ ধরনের জাতীয় স্বার্থ উন্নয়নের বিরুদ্ধে যারা থাকেন, তারা জাতির শত্রু, দেশের শত্রু। তাদের চিহ্নিত করা দরকার।
গত শনিবার উদ্বোধনের পরদিন রবিবার ভোর ৬টায় যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হয় পদ্মা সেতু। কিন্তু এ সেতু নির্মাণকে ঘিরে বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতির নানান গুজব ছড়ানো হয়। কে বা কারা সেসব গুজব ছড়িয়েছিল এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তদন্ত কমিশন গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পদ্মা সেতু নির্মাণের পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘ইউনূসের বিচার দাবি: আওয়ামী লীগ ও সমমনা দলগুলো একাট্টা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। একই সঙ্গে এ জাতীয় অন্যান্য দৈনিকের প্রতিবেদনেও ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ অনেকের নাম ওঠে আসে। পরদিন ১৫ ফেব্রুয়ারি সেসব প্রতিবেদন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে উপস্থাপন করা হয়। প্রতিবেদনগুলো আমলে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
পদ্মা সেতু নির্মাণ চুক্তি এবং দুর্নীতির মিথ্যা গল্প সৃষ্টির নেপথ্যে থাকা প্রকৃত ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে তদন্ত কমিশন গঠন করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং দোষীদের কেন বিচারের মুখোমুখি করা হবে না, তা জানতে চান আদালত। মন্ত্রিপরিষদ, স্বরাষ্ট্র, আইন ও যোগাযোগ সচিব এবং দুদকের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।