ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বানের জল এখন চোখে

বানের জল এখন চোখে
  • হবিগঞ্জে পানিতে ভেসে গেছে ৮ হাজার মৎস্য খামার
  • ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি
  • ঋণ পরিশোধে দুঃশ্চিন্তায় খামারিরা

ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের তালিকা উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করা হয়েছে, পূর্নবাসনের বিষয়ে সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে: মো. নজরুল ইসলাম, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা, হবিগঞ্জ

চলতি বন্যায় হবিগঞ্জের ৭ উপজেলায় প্রায় ৮ হাজার পুকুর, ফিশারী ও মাছের খামার তলিয়ে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৫৩ জন মৎস্য চাষি। তাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার। এদিকে, ঋণ নিয়ে জেলার অনেক খামারী তাদের ফিশারীতে মাছ চাষ করেন। বন্যার পানিতে ফিশারীর মাছ ভেসে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা। ঋণ পরিশোধ নিয়ে এখন  দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন অনেক মৎস্য খামারি।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় ১৩৫০ হেক্টর জমিতে থাকা ৭ হাজার ৯০১টি পুকুর, ফিশারি ও খামারে মাছ চাষ করেন ৫ হাজার ৮৫৩ জন মৎস্যচাষি। চলতি গত কয়েক দিনের বন্যায় জেলার বানিয়াচং, আজমিরীগঞ্জ, বাহুবল, নবীগঞ্জ, মাধবপুর, লাখাই ও হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে ওই ৭ উপজেলার ১৩৫০ হেক্টর জমিতে থাকা ৭ হাজার ৯০১টি পুকুর, ফিশারি ও খামারের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে ৫ হাজার ৮৫৩ জন খামার মালিকের প্রায় ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

এদিকে, বন্যায় কবলিত হয়ে অনেক পুকুর, ফিশারি ও খামারের মাছ ভেসে যাওয়ায় চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অনেক মৎস্যচাষি। ঋণ নিয়ে অনেকেই ফিশারি ও পুকুরে মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। বন্যার পানিতে এসব মাছের পোনা ভেসে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধ করা নিয়েও এখন দুঃশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা।

তাছাড়া সরকারিভাবে মৎস্য খামারের পূর্ণবাসন না থাকায় অনেকেই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। চরম এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে তাদের কয়েক বছর সময় লাগতে পারে বলে জানান মৎস্যচাষিরা।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার হামিদপুর গ্রামের মাছচাষি রমজান আলী জানান, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গুঙ্গিয়াজুরী হাওরে থাকা তার ১৩০ শতক ফিশারিতে তিনি ৩ লাখ টাকার মাছের পোনা অবমুক্ত করেন। তবে, বন্যার পানিতে ফিশারির মাছ ভেসে যাওয়ায় তিনি ৬ লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন । ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে তিনি এখন দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন।

একই উপজেলার উত্তর সুলতানশী গ্রামের শাহ আলম (ইজ্জত আলী) জানান, গুঙ্গিয়াজুরি হাওড়ে ১৩০, ১২০ ও ১১০ শতক জায়গার ৩টি ফিশারিতে ৫ লাখ টাকার মাছ চাষ করেন তিনি। বন্যার পানিতে মাছ ভেসে যাওয়ায় তার প্রায় ৮ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, বন্যা কবলিত হয়ে জেলায় ৫ হাজার ৮৫৩ জন মৎস্যচাষি ৪২ কোটি ২৩ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৭ উপজেলার মৎস্য খামারিদের ক্ষতির পরিমাণ তালিকা তৈরি করে মৎস্য অফিসের উর্দ্ধতন কর্মকর্তার কাছে প্রেরণ করা হয়েছে’। ক্ষতিগ্রস্থ খামারীদের সরকারী ভাবে সহযোগিতা করা হবে কি-না ? জানতে চাইলে তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে খামারিদের পূর্ণবাসনের কোন ব্যবস্থা নেই। তবে বন্যায় কবলিত সারাদেশে ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের পূর্নবাসনের বিষয়ে সরকারি ভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।

সংবাদটি শেয়ার করুন