রবিবার, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফের ডুবলো চায়ের দেশ

ফের ডুবলো চায়ের দেশ

গত কয়েকদিনের টানাবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট নগরীসহ বেশ কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন মানুষ। প্রতিনিয়ত বাড়ছে নদী তীরবর্তী এলাকার পানি। নতুন করে বিভিন্ন এলাকার বাড়িঘরে পানি উঠছে। চারিদিকে খাবার, বিশুদ্ধ পানির জন্য চলছে হাহাকার। এমন অবস্থায় বন্যাকবলিত পরিববার গুলো দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগের শঙ্কায় আছেন। তবে সিলেট জুড়ে বন্যা আরও ভয়াবহতার দিকে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন অনেকে। কোথাও কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, বন্যা পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারন করায় বানভাসি মানুষকে উদ্ধারে কাজ শুরু করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় অসহায় হয়ে পড়েছেন গোটা সিলেটের মানুষ ও প্রশাসন। ভানভাসিদের উদ্ধারে জেলা প্রশাসনের পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদি না থাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে আহ্বান করার পর তারা মাঠে নেমেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। আপাতত দুটি টিম কাজ করছে।

স্থানীয় প্রশাসন সূত্রমতে, সিলেট নগরের ৮ থেকে ১০টি এলাকা ছাড়াও জেলার সুনামগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও সদর উপজেলার অন্তত ৫০০ গ্রাম এরই মধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। কয়েক লক্ষাধিক লোকজন পানিবন্দি রয়েছে। এসব এলাকার একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়ের ভেতরে পানি ঢুকে পড়ায় স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। নগর ও ৬ উপজেলায় অন্তত চার থেকে সাড়ে চার লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছে বলে বানভাসীরা জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সুনামগঞ্জ। ইতোমধ্যে সারাদেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। মোবাইল ফোনেরও নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। রয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। এমন অবস্থায় জেলার ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলায় বন্যাকবলিতদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী কাজ করছে বলে জানা গেছে।

এদিকে, সিলেট জেলাজুড়ে ভয়াবহ বন্যার কারণে ১৯ জুন থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় আগামী ১৯ জুন অনুষ্ঠিতব্য সকল শিক্ষা বোর্ডের এসএসসি জেনারেল, এসএসসি ভোকেশনাল এবং দাখিল পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। পরীক্ষার পরিবর্তিত সময়সূচি পরে জানানো হবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এস,এস,সি পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।

সিলেট প্রতিনিধি সরেজমিনে ঘুরে জানিয়েছেন, সিলেট নগরের উপশহর, তালতলা, কালিঘাট, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, তেররতন, ঘাসিটুলাসহ অন্তত ১০টি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মানুষ ভোগান্তি নিয়ে পথ চলছে। অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি উঠেছে। এরই মধ্যে কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে হাঁটুপানি। ঘরের ভেতরে পানি ওঠায় অনেকে নিরাপদ জায়গায় সরে যাচ্ছেন। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার কালীঘাটের বিভিন্ন দোকান তলিয়ে যাওয়ায় সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  সিলেটের অর্থনীতিতে বন্যার করাত

সিলেটের জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, এ পর্যন্ত আমরা ২৯৮ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দিয়েছি। নগদ সাড়ে ছয় লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। এ সময় বন্যাদুর্গতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জেলার সবকটি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন প্রবেশ করেছেন। তাদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি আমরা। এমন পরিস্থিতিতে বানবাসীদের পাশে রয়েছেন জেলা প্রশাসন। খাবার বিতরণ ও উদ্ধার কাজে মাঠে কাজ করছে সেনাবাহিনী।

গতকাল শুক্রবার বিকেল ৩ টায় সিলেট জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসন আন্তরিকভাবে কাজ করছে। যাদের বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে অথবা নিরাপদ জায়গায় চলে আসতে বলা হচ্ছে। ত্রাণ সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে। সেনাবাহিনী উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে এবং বন্যা কবলিতদের মাঝে শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছে। এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৪শ টন চাল ও ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে’।

স্থানীয়রা জানান, এর আগে বৃহস্পতিবার রাতের বন্যার পানি গলাসমান হয়ে যায়। শুক্রবার সকালে অনেক মানুষকে ঘরের চালায় আশ্রয় নিতে হয়েছে। অবিরাম বৃষ্টি হওয়ায় সেখানেও তারা থাকতে পারছেন না। নৌকার অভাবে আশ্রয়কেন্দ্রেও যেতে পারছেন না বানবাসীরা। তাদের মতে, গত বন্যায় ২০০৪ সালের সালের বন্যাকে অতিক্রম করেছে। আর এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট অফিস দৈনিক আনন্দবাজারকে জানায়, শুক্রবার সকাল ৬টায় সুরমা নদীর দুটি ও কুশিয়ারা নদীর একটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এছাড়া সারি নদের একটি পয়েন্টেও পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। তবে বিকেলের দিকে বাড়তে থাকে পানি। যে কারণে শহরের কিছু কিছু এলাকা ছাড়া পুরো সিলেটবাসী পানিবন্দি হয়ে পড়েন।

স্থানীয়রা বলছেন, ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে সুরমা-কুশিয়ারার পানি অনবরত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে বেশি প্লাবিত হয়েছে সিলেটের সীমান্তর্তী অঞ্চল কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট এলাকার বিস্তীর্ণ জনপদ। বানের জলে ভেসে যাচ্ছে কাঁচা ও টিনশেড বাড়িঘর। এমন অবস্থায় সরকারি সহায়তাও পোঁছাচ্ছে না মানুষের কাছে।

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা সুমন মিয়া জানিয়েছেন, বন্যার পানিতে পুরো উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সিলেট শহরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, সরকারিভাবে উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বন্যা দুর্গত এলাকার জন্য ৪০ টন চাল ও ৫০ হাজার টাকার শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ  মার্চে হতে পারে বন্যা

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে জরুরী কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে। উপজেলায় ২৪টি আশ্রয়ন কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। প্রশাসন থেকে ৬টি ইউনিয়নে ২৪ মেট্রিক টন চাল ও ৫০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের সিনিয়র আবহাওয়াবিধ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘পুরো জুন মাসে ৮১৮ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ার কথা। আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত সিলেটে ভারী বর্ষণ হবে। তাতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে’।

বন্যায় আটকা ঢাবির ২১ শিক্ষার্থী

সুনামগঞ্জে ভ্রমণে গিয়ে বন্যায় আটকা পড়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ শিক্ষার্থী। তাঁরা খাবার, সুপেয় পানিসহ নানা সংকটে দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন বলে জানা গেছে। উদ্ধারের জন্য তাঁরা আরজি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের দলটি তিন দিন আগে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে গিয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। এ অবস্থায় ভ্রমণে যাওয়া ঢাবির এই শিক্ষার্থীরা সুনামগঞ্জের একটি রেস্তোরাঁয় আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাত্রী।

বিমানবন্দরে বন্যার পানি, বন্ধ হচ্ছে ফ্লাইট

বন্যার পানি ইতোমধ্যেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। এতে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশ ও বিদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হতে যাচ্ছে। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ম্যানেজার হাফিজ আহমদ বলেন, বন্যার পানি ইতোমধ্যেই সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ের কাছাকাছি চলে এসেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রতিদিনের মতোই আমাদের ফ্লাইটগুলো বিমানবন্দরে অবতরণ ও বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করেছে। কিন্তু রানওয়ের কাছাকাছি বন্যার পানি চলে আসায় এখন থেকে আর কোনো ফ্লাইটের অবতরণ কিংবা উড্ডয়ন সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে। অফিসিয়ালি ফ্লাইট বন্ধের ঘোষণা চলে আসবে।

এক সপ্তাহ বন্ধ শাবি

টানা বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস প্লাবিত হয়েছে। এ কারণে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে ছুটি আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।

গত শুক্রবার সকাল ১০টায় জরুরি সিন্ডিকেটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, খাবার পানি, বিদ্যুৎ ও হলে সার্বিক সুবিধা ও নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার অনুরোধ করছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপদ দূরত্বে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্র আশ্রয়

সিলেটের পুরো জেলায় পানি প্রবেশ করায় বাসিন্দারা বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্র, আত্মীয়দের বাড়ি ও বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নিয়েছেন। গত মাসেই সাম্প্রতিককালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়ে যায় সিলেটে। ১১ মে থেকে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গত বন্যার ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সিলেট। বর্তমানে বন্যার এমন বিপর্যস্ত হয় মানুষের জীবন। ভেসে যায় খামারের মাছ, ভেঙে যায় সড়ক, বাঁধ, ঘরবাড়ি। ক্ষতি হয় শত শত কোটি টাকার। এমন অবস্থায় বন্যাকবলিত পরিববারগুলো দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগের আশঙ্কা করছে।

আরও পড়ুনঃ  বাঁধ ভেঙে প্লাবিত ফেনীর ১৩ গ্রাম

অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার শঙ্কা

চলমান ভয়াবহ বন্যার পানি বিদ্যুৎ উপ-কেন্দ্রে প্রবেশ করায় পুরো সিলেট অন্ধকারে নিমজ্জিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কুমারগাঁও ও বরইকান্দিতে বিদুৎ উপ-কেন্দ্রে পানি প্রবেশ করেছে। কুমারগাঁওয়ে জাতীয় গ্রিডের উপ-কেন্দ্রের মাধ্যমে পুরো সিলেটে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ইতোমধ্যে কুমারগাঁওয়ের ১৩২/৩৩ কেভি উপ-কেন্দ্রের সুইচ ইয়ার্ডে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বর্তমান ধারায় পানি বৃদ্ধি হতে থাকলে অচিরেই কন্ট্রোল রুমের ভেতরে পানি প্রবেশ করবে। তখন সিলেটের বিরাট অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিদুৎ বিভাগের জরুরি সতর্কবার্তা

সিলেট ও সুনামগঞ্জে বিদ্যুৎহীন ৩ লাখ গ্রাহক

আকস্মিক বন্যায় সিলেট নগরের উপশহর, সোবহানীঘাট, মেন্দিবাগ, মুরাদপুর এবং আশপাশের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তাই গ্রাহকদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে জরুরি সতর্কবার্তা দিয়েছে সিলেট বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ। এর আগে বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, আকস্মিক বন্যার কারণে উপশহর, সোবহানীঘাট, মেন্তিবাগ, মুরাদপুর এবং আশপাশের প্লাবিত হয়েছে। যে কারণে বিদুৎ গ্রাহকদের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে সতর্ক করা যাচ্ছে যে, পানিতে কোনো বৈদ্যুতিক তার, খুঁটি বা অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি পড়ে থাকলে কিংবা গাছপালা বৈদ্যুতিক লাইনে পড়লে স্পর্শ না করে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর দপ্তরের এই নাম্বারে ০১৬২৫০৩৮৭৮৪ এবং ০২৯৯৬৬৩৩১৭৩ যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়। প্রকৌশলী শামস-ই আরেফিন বলেন, বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ ব্যাপারে সকলে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে এই বন্যার সময় সব ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জরুরি সভা
সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতিতে করনীয় বিষয়ে জরুরী ভার্চুয়াল সভা করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল শুক্রবার (১৭ জুন) বিকেল সাড়ে ৪ টায় এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে এতে যুক্ত ছিলেন সকল অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক প্রশাসন, হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ, রোগ নিয়ন্ত্রণ, এমআইএস। লাইন ডাইরেক্টর উপজেলা হেলথ কেয়ার, লাইফস্টাইল এন্ড হেলথ এডুকেশন প্রমোশন। তাছাড়া স্বাস্থ্য বিভাগীয় পরিচালক (সিলেট বিভাগ), সিভিল সার্জন (সকল, সিলেট বিভাগ), উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (সকল, সিলেট বিভাগ) এ ভার্চুয়াল সভায় যোগদেন।

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন হবিগঞ্জ প্রতিনিধি আখলাছ আহমেদ প্রিয় ও মৌলভীবাজার প্রতিনিধি তানভীর আঞ্জুম আরিফ)

আনন্দবাজার/শহক

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন