টানা বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অনেক এলাকায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন ও কিছু সাবস্টেশন ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া এসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ৩ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন।
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় তলিয়ে গেছে সিলেটের কয়েকটি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র। সঞ্চালন লাইনও পানিতে তলিয়ে। এতে বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের অনেক এলাকা।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সূত্রে জানা গেছে, পানি উঠছে সিলেটের কুমারগাঁওয়ের বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিড লাইনের উপকেন্দ্রেও। আরেকটু পানি বাড়লে বন্ধ হয়ে পড়বে এই কেন্দ্র। এতে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বেশিরভাগ এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে।
তবে শুক্রবার দুপুর থেকে সেনাবাহিনী, বিদ্যুৎ বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিটি করপোরেশন সম্মিলিতভাবে এই উপকেন্দ্র চালু রাখতে কাজ করছে। বালির বস্তা ফেলে উপকেন্দ্রে পানি আটকানোর চেষ্টা চলছে। কেন্দ্রে ঢুকে পড়া পানি সেচ দিয়ে শুকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে বাঁধ দিয়ে পানি ঠেকানো যাবে না বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা।
বোর্ড কর্মকর্তারা জানান, সিলেট বিভাগের চার জেলায় পিডিবির প্রায় সাড়ে চার লাখ গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে সিলেটের ১ লাখ এবং সুনামগঞ্জের ৯০ হাজার গ্রাহক এখন বিদ্যুৎহীন।
সিলেট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেনারেল ম্যানেজার দীলিপ চন্দ্র চৌধুরী জানিয়েছেন, সমিতির সিলেট-১-এর অধীনে থাকা ৪ লাখ ১৩ হাজার গ্রাহকের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎহীন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২-এর জেনারেল ম্যানেজার সঞ্জীব কুমার রায় জানিয়েছেন, সিলেট-২-এর অধীনে থাকা ২ লাখ ১২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে বিদ্যুৎহীন অন্তত ৯০ হাজার গ্রাহক।
সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামছ-ই-আরেফিন বলেন, ‘বন্যার অবনতি হওয়ায় অনেক স্থানেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না।’
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবদুল কাদির বলেন, ‘অনেক এলাকায় বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন তলিয়ে গেছে। কিছু সাবস্টেশন ডুবে গেছে। এতে ওইসব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ঝুঁকি বিবেচনায় আরও কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
বিদ্যুৎহীন এলাকায় মোমবাতি ও কেরোসিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক জায়গায় বেড়ে গেছে দামও।
নগরের মিরাবাজার এলাকার নাহিদ হাসান বলেন, ‘সন্ধ্যায় পুরো মিরাবাজার এলাকা ঘুরেও মোমবাতি পইনি। জিন্দাবাজার এসে মোমবাতি পেলেও ৫ টাকার মোমবাতি ৮ টাকা দামে কিনতে হয়েছে।’