স্বাস্থ্যখাতে উন্নয়ন বরাদ্দের ২০-২২ শতাংশই ব্যয় হয় না। অথচ মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে বেসরকারি হাসপাতালের দিকে ঝুঁকছে। এদিকে জরুরি ফান্ডে ৩০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেয়া হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে সমস্যাগুলো সমাধান হয়ে গ্রামীণ মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবে জানানো হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের উদ্যোগে ‘কেমন হলো স্বাস্থ্য বাজেট ২০২২-২৩’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা, অর্থাৎ ১৪ শতাংশ থাকলেও চলতি বাজেটে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা অথাৎ ১২ শতাংশ হয়েছে। চলতি বাজেট আরো বাড়ানো দরকার ছিল। গতবছরে করোনায় ১০ হাজার কোটি থাকলেও এবার ৫ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজেটে সাধারণ মানুষের ব্যবহৃত জিনিসে ট্যাক্স ধরা হয়নি। বিলাসী পণ্যে ধরা হয়েছে। শিল্পের কাঁচামালে ট্যাক্স কমানো হয়েছে। প্রতি বছর ২০ লাখ মানুষ কর্মবাজারে ঢুকে তাদের কাজ দেয়া দরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবাকে ডিজিটালাইজেশন শুরু করা হয়েছে। পলিথিন বন্ধ হওয়া দরকার। এটি স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে পরিবেশ সবদিকেই ক্ষতি করে। এ জন্য এখানে করারোপ বৃদ্ধি করা দরকার। এমনকি পর্যায়ক্রমে পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হবে।
বুধবার রাজধানী ঢাকার মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হল রুমে সংগঠনটির সভাপতি রাশেদ রাব্বির সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরারে সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল ও সহ-সভাপতি সেবিকা দেবনাথ মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এম এ আজিজ ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির প্রমুখ।
মাইনুল হাসান সোহেল বলেন, আমাদের দেশে ২.৩ শতাংশ স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় হয়। মাথাপিছু ব্যয় হয় মাত্র ৪৫ ডলার। যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন।
সেবিকা দেবনাথ বলেন, নাগরিকদের পকেট থেকে স্বাস্থ্যসেবায় ৬৮ শতাংশ করতে হচ্ছে। অথচ সংবিধানে এটিকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্থান দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশে জিডিপির ২.৩ শতাংশ নেয়া হয়। যা নেপালের চেয়েও ১৩ শতাংশ কম।
অধ্যাপক সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, কেন বাজেট বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না সে সম্পর্কে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বেশিরভাগ সময়ই উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারে না। এটি ২০-২২ শতাংশ ব্যয় হয় না। যন্ত্রপাতি কেনাকাটায় বাজেট খরচ করা যাচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাস করতে দেরি হয়।
আনন্দবাজার/টি এস পি




