ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ ছয় দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালসহ ছয় দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

“হঠাও রাজাকার বাঁচাও দেশ, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ” এই স্লোগানে সকল শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহাল, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন; প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তিকারী ও হত্যার হুমকিদাতাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করাসহ ছয় দফা দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের আয়োজনে এসব কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

সংগঠনটির সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও বিশ্বিবদ্যালয় থেকে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা এই মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বক্তব্য রাখেন।

তারা বলেন, যাঁদের আত্নত্যাগের বিনিময়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে; তাঁদের সন্তান ও প্রজন্মদের মেথর, কেরানি ও ঝাড়–দার বানানোর জন্য চতুর্থ শ্রেনির কোটা রেখে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর (অর্ধেক অংশ) কোটা বাতিল করে দিয়েছে। যদিও কোটা বাতিলের সচিব কমিটি বলছে ৯ম গ্রেড (প্রথম শ্রেণি), ১০ম-১৩তম গ্রেড (পূর্বতন ২য় শ্রেণি) সরাসরি নিয়োগে কোটা বাতিল করা হয়েছে। প্রকতৃপক্ষে  ৯ম গ্রেড প্রথম শ্রেণি এবং শুধু ১০ম গ্রেড দ্বিতীয় শ্রেণি, ১১ থেকে ১৬তম গ্রেড তৃতীয় শ্রেণি, ১৭-২০তম গ্রেড চতুর্থ শ্রেণি। কিন্তু তারা কৌশলে পূর্বতন শব্দটি যোগ করে তৃতীয় শ্রেণির তিনটি গ্রেড বাতিল করে দিয়েছে।  -এর মূল কারন হলো ১১-১২তম গ্রেডের কর্মচারীরা পদোন্নতি পেয়ে অনেক সময় সিনিয়র সহকারী সচিব ও উপসচিব পর্যন্ত হয়ে যায়। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মরা যাতে প্রশাসনের ভালো চেয়ারে বসতে না পারে সে জন্য এসব কোটা বাতিল করেছে বলে আমরা মনে করি। তাই আমরা অবিলম্বে এসব বাতিল কোটা পুনর্বহাল চাই।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষার বলেন,  ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের পরিপত্রে ৯ম-১৩তম গ্রেডে সরাসরি নিয়োগে কোটা বাতিল করা হলেও প্রকৃতপক্ষে এখনও বিভিন্ন দপ্তরে ১০-১৩তম গ্রেডে জেলা কোটা, মহিলা কোটা ও পোষ্য কোটা রেখে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিচ্ছে। সবার কোটা বহাল থাকলেও নেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় প্রতিপন্ন করতেই এ কোটা বাতিল করা হয়েছে। তাই অবিলম্বে  মুৃক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা চালু করে প্রশাসনে বীরের সন্তানদের আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।’ এ সময় তিনি মুক্তিযোদ্ধা কোটা ছাড়া অন্যান্য কোটা রেখে ১০-১৩তম গ্রেডে নিয়োগ দেওয়া অনন্ত ৩০ টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল গাফফার কুতুবী বলেন, দ্রুত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন দেওয়া দরকার। নির্বাচন না হওয়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে নেওয়া প্রায় ১ হাজার ২২৪ কোটি টাকার ৪৭০ টি কমপ্লেক্সের মধ্যে ৪০৬ টি সম্পৃর্ন হলেও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সগুলো বুঝে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া মুৃক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার চিকিৎসার বরাদ্দ দিলেও তা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অবিলম্বে সকল সমস্যা সমাধনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচন চাই।

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধাদের বীর উপাধি দিয়েছে। কিন্তু কোটা সংস্কারের নামে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মদের শ্রেণি বিন্যাস করে চতুর্থ শ্রেণির মর্যাদা বা নাগরিকত্ব দেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেছে। যা সম্পূর্ণরূপে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে অপমান অপদস্ত করার সামিল।

মানববন্ধনে অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান রনি, মনিরুজ্জামান, মাসুদ মাহমুদ,মাসুদ খান, রোকসানা নাজনীন, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক  এসএম শিবলি ফোরকান অর্থ সম্পাদক মাহমুদা খাতুন, মিঠুু, দপ্তর সম্পাদক এহসানুল আবেদীন, বাহ্মণবাড়িয়া জেলা কমিটির সভাপতি সুরাফ জালালি,যশোর থেকে শিহাব,নেত্রকোনা থেকে আল মামুন বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগতরা নেতৃবৃন্দ।

সংবাদটি শেয়ার করুন