শনিবার, ৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোজ্যতেলের সুখবর তিলচাষে

ভোজ্যতেলের সুখবর তিলচাষে
  • সিরাজগঞ্জে তিলের বাম্পার ফলন
  • দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের
  • তিলগাছ মেটাচ্ছে জ্বালানির চাহিদা

চলতি বছর সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর উপজেলায় তিলের বাম্পার ফল হয়েছে। কম শ্রম এবং কম খরচে সব মাটিতে উৎপাদন হওয়ায় তিল চাষে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে এ উপজেলার কৃষকদের। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরেযাবে তিল চাষীদের ভাগ্য। এখন বিল ও চরের দিকে তাকালে সচারাচর আগের মত কোনো তিল ক্ষেত চোখে পরেনা। এক সময় উপজেলায় তিলের ব্যাপক চাষ ছিল। তবে কালের বিবর্তনে সেই চাষ অনেকটাই হারিয়ে গেছে। এর পরেও এখনও শাহজাদপুরের বিভিন্ন স্থানে বিশেষকরে যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরের জমিতে তিলের আবাদ করতে দেখা যায়। তবে এর সংখ্যা আগের তুলনায় একেবারেই সামান্য।

চাষিরা জানায়, তিল চাষে সার ও কীটনাশক লাগে না বললেই চলে। গরু ছাগলে তিল খায় না তাই রক্ষণাবেক্ষণে কোনো খরচ হয় না এবং শুকনো তিলগাছ গুলো পরিবারের জ্বালানীর চাহিদা পূরণ করে। যমুনার চরে স্থানীয় কৃষক আব্দুল কাদের এর জমিতে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকের জমিটি তিল গাছে ভরে গেছে। জমিতে সবুজের বুকে যেন সাদার রাজত্য। পুরো জমি তিল ফুলে ফুলে ভরে গেছে। মৌমাছিরা ফুল থেকে মধু আহরণ করছে। এ যেন এক অপরুপ দৃশ্য।

সব ধরণের মাটিতে উৎপাদন হওয়া এবং রোগ-বালাই কম হওয়ায় এবং অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম পরিচর্যা করতে হয় তিল চাষে। তিল চাষে দেশের ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটানোসহ তিল চাষীরাও অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে বলে মনে করেন কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা এহসানুল হক।

আরও পড়ুনঃ  যাত্রী সংকটে ফ্লাইট বন্ধ করেছে বিমান

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতবছর উপজেলায় তিল চাষ হয়েছিল ১৮৫০ হেক্টর জমিতে এবার তা বেড়ে ১৯৬৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে তিলের সর্বোচ্চ খরচ হয় ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা এবং  ফলন হতে পারে ৪ থেকে ৫ মন। বর্তমান প্রতি মন তিলের বাজার দর ৩৮০০-৪০০০ টাকা। ১ মন ভাল মানের তিল থেকে প্রায় ১৬-১৮ কেজি তেল উৎপাদন হয়ে থাকে এবং তিলগাছ জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এ বছর উপজেলার সোনাতনী, কৈজুরী, গালা এবং রুপবাটি ইউনিয়নে তিলের চাষ হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষি কৃষিবিদ মোহাম্মদ আব্দুস ছালাম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে অর্থনৈতিকভাবে ঘুরে যাবে তিল চাষীদের ভাগ্য। এবার উপজেলায় তিলের আবাদ হয়েছে প্রায় ১৯৬৫ হেক্টর জমিতে। কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করায় এবার অর্থকরী ফসল হিসেবে গত বারের চেয়ে তিল চাষ বেশি হয়েছে। বর্তমানে তিলের বাজার খুবই ভাল। আশা করছি ভাল জাতের তিলের চাষাবাদ করলে এখানকার কৃষকরা আর্থিকভাবে অনেক লাভবান হবেন। এই চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহী করতে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি দপ্তর।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন