ঢাকা | বুধবার
১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি চরমে

জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি চরমে
  • অল্প বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় হবিগঞ্জ শহরের অলি-গলি রাস্তা, বাড়ছে মানুষের ভোগান্তি, যান চলাচলে ব্যাঘাত
  • হাটবাজার করতে এসে বিড়ম্বনায় পড়ছেন ক্রেতা-সাধারণ
  • পরিকল্পিতভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে সমস্যার সমাধান করা হবে : আতাউর রহমান সেলিম, মেয়র, হবিগঞ্জ পৌরসভা

এবারও জলাবদ্ধতা থেকে মিলছে না মুক্তি। প্রতি বছরই জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় হবিগঞ্জ শহরবাসীকে। বৃষ্টি হলেই শহরের অলিগলি ও ছোট পরিসরের রাস্তা গুলোতেও পানি জমে যায়। পানি নিষ্কাশনের ড্রেন আবর্জনায় ভরাট থাকায় যথাসময়ে বৃষ্টির পানি বের হতে পারে না। বিভিন্ন এলাকার নালা, গর্ত ও নিচু জায়গায় পানির জমাট বেধে থাকে। এতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। যে কারণে চরম দূর্ভোগে পড়েন শহর এলাকার স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থীসহ বসবাসরত জনসাধারণ। তাছাড়া হাট-বাজার করতে এসে বিড়ম্বনায় পড়ছেন সাধারণ ক্রেতারা।

এদিকে, বিভিন্ন এলাকায় পানি থাকায় যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। স্কুল-কলেজ ও অফিস আদালতে যাতায়াতে বাড়ছে ভোগান্তি। ব্যয় হচ্চে অতিরিক্ত সময়। অন্যদিকে, বৃষ্টির পানিতে অনেক রাস্তা তলিয়ে যায়। যে কারনে রাস্তা না দেখা যাওয়ার কারণে দূর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন চালকরা।

তবে বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিতভাবে নালা নির্মাণের কারণেই এসব এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা অভিযোগ করে বলেন, ‘বৃষ্টি এলেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এর মূল কারণ হল, বর্জ্য অপসারণে অব্যবস্থাপনা ও অপরিকল্পিতভাবে নালা নির্মানের কারন’। অল্প বৃষ্টিতেই শহরের শায়েস্তানগর পানি ভবন এলাকা, গণপূর্ত কোয়ার্টার, মোহনপুর, টাউন মডেল স্কুল, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন, সিনেমা হল রোড, নিউ মুসলিম কোয়ার্টার, বিদ্যুত অফিস, শ্যামলী, পুরান মুন্সেফী, আহসানিয়া মিশন, চিড়া কান্দি, শংকর মুখ ও চৌধুরীবাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে থাকে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েন এসব এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণ। পানি নিস্কাশন হতেও দীর্ঘ সময় লেগে যায়। যে কারনে চরম দূর্ভোগে পড়েন ওই এলাকার স্কুল-কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ সাধারণ জনগন।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে এ জলাবদ্ধতা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। এ বিষয়ে শিগগিরিই পৌর কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে  পুরো শহর এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে পারে।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ও সোমবার সকাল ও বিকেলে হবিগঞ্জ শহরের বৃষ্টিপাত হয়। এতে পানি উন্নয়ন বোর্ড সড়ক, শংকরের মূখ (চিড়াকান্দি সড়ক), ঘাটিয়া এলাকাসহ শহরজুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে পানি জমে যায়। অনেকের বাসার ভেতরে পানি প্রবেশ করে। এতে বাসায় থাকা মূল্যবান আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যায়।

অভিযোগ রয়েছে, শহরের খোয়াই নদী অবৈধ দখল ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে বাসা-বাড়ি নির্মাণ করার কারনে পানি নিস্কাশনে ব্যাঘাত ঘটে। অনেক জায়গায় রাস্তা বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ড্রেনের ব্যবস্থা না থাকায় শহরের যশেরআব্দা এলাকায় অল্প বৃষ্টিতে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। পানি নিষ্কাশন না হওয়ার কারণে অসংখ্য ঘরবাড়ি, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ময়লা আবর্জনা পানিতে ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন রোগ জীবানুর সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। ওই এলাকার অলিগলিতে জমা হয়ে পড়েছে ময়লা স্তুপ। অনেকদিন যাবত এলাকায় সংস্কারের চেষ্টা চালালেও এখন পর্যন্ত কোন প্রতিফলন ঘটেনি। এ ব্যাপারে পৌর কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় রিক্সা চালক ইদন মিয়া জানান, বৃষ্টিরদিনে যাত্রী নেই, পানিবন্দি থাকার কারনে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তাই তেমন একটা রুজিও হচ্ছে না। তাছাড়া বৃষ্টির পানিতে অনেক সময় রাস্ত দেখা যায় না। এতে দূর্ঘটনার আশঙ্কাও রয়েছে।

কলেজ ছাত্র সুমন মিয়া বলেন, ‘হবিগঞ্জ শহরের জলাবদ্ধতা নিত্যদিনের সঙ্গী। মার্কেটে যাওয়ার সময় সড়কে পানি জমে থাকার কারণে আসা যাওয়া বিলম্ব হচ্ছে। অনেকে আবার পানি পেরিয়ে অধিকাংশ দোকানপাটে যেতে চায় না’। যারা বাজার করছেন তারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

হবিগঞ্জ পৌর সভার মেয়র আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘পরিকল্পিত ভাবে ড্রেনেজ ব্যবস্থা করে এ সমস্যার সমাধান করা হবে। তবে, যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে নালা ও জলাশয় ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা দেখা দিচ্ছে। হবিগঞ্জ পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি’।

সংবাদটি শেয়ার করুন