ঢাকা | শনিবার
২১শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিলারদের কারসাজি চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রায় শঙ্কা

মিলারদের কারসাজি চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রায় শঙ্কা
  • জেলায় ২৫৪টি রাইচমিল খাদ্য বিভাগের সাথে চুক্তিবদ্ধ হলেও দিয়েছে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি মিল

যশোরে খাদ্যবিভাগের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ব্যার্থ হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে হাতেগোনা কয়েকটি অটোমিল ছাড়া আর কোনো মিলার এখনো পর্যন্ত চাল দেয়ার জন্য উ”চবাচ্য করছেন না। তারা কেবলই বৃষ্টির অজুহাত দিচ্ছেন। বলছেন, চাতাল শুকাচ্ছে না। এ কারণে ধান শুকাতে পারছে না।

খাদ্যবিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা বলছেন, গ্রামের মানুষ প্রতিদিনই ধান সিদ্ধ শুকনো করছে। যে পরিমাণ বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ধান সিদ্ধ শুকনো করা আটকাচ্ছে না। মিলাররা অজুহাত দিচ্ছেন মাত্র। খাদ্যবিভাগের পক্ষ থেকে তেমন চাপ না থাকায় মিলাররা গড়িমসি করছেন বলে সূত্রের দাবি।

খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, এ বছর জেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬ হাজার ৭শ’ ৫৪ মেট্রিকটন। এ পর্যন্ত দু’ হাজার মেট্রিকটনের মতো চাল সংগ্রহ হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে। এখনো বাকি প্রায় ২৪ হাজার ৭শ’ ৫৪ মেট্রিকটন। দু’ মাসে যে পরিমাণ চাল সংগ্রহ হয়েছে তা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় খুবই কম বলে মনে করছেন খাদ্যবিভাগের কর্মকর্তারা।

গত ২৯ মে পর্যন্ত সদর খাদ্যগুদামে ৪৪৪.৯৯০, মণিরামপুরে ২০ মেট্রিকটন ১০ কেজি, কেশবপুরে ৫ মেট্রিকটন ১শ’ কেজি, নওয়াপাড়ায় ৭২৯ মেট্রিকটন ৯শ’ ৫০ কেজি, ঝিকরগাছায় ২৪৭.২৯০ মেট্রিকটন, নাভারণে ২৭.৭শ’৫০ মেট্রিকটন, বাগআঁচড়ায় ১০৭ মেট্রিকটন ৭শ’ কেজি ও চৌগাছায় ১৮৯.২১৪ মেট্রিকটন চাল জমা হয়। ওইদিন পর্যন্ত খাজুরা খাদ্যগুদামে চাল জমা দেননি কোনো মিলার।

সূত্র জানিয়েছে, জেলায় ২শ’৫৪ টি রাইচমিল চাল দিতে খাদ্যবিভাগের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। এরমধ্যে অটো রাইচমিল রয়েছে ২৩ টি। বাকি ২শ’ ৩১ টি হাসকিং মিল। চাতাল শুকাচ্ছে বলে এতদিন চাল দেননি হাসকিং মিলের মালিকরা। এখন নতুন অজুহাত দাঁড়া করেছেন। তারা বলছেন, বাজারে মোটা চালের দাম বেড়েছে। বেড়েছে ধানের দামও। এ কারণে মিলাররা গড়িমসি করছেন বলে সূত্রের দাবি। তাদেরকে চাপ না দিলে নানা ছলছুঁতোয় চুক্তি মোতাবেক চাল দিবে না বলে আশঙ্কা করছেন খাদ্যবিভাগের অনেক কর্মকর্তা। এ পর্যন্ত ২শ’৩১ টি হাসকিং মিলের মধ্যে মাত্র তিনটি মিল চাল দিয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে, বৃষ্টির কথা বলে কোনো কোনো অটো মিল মালিক বেশি আর্দ্রতার চাল দেয়ার অপচেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে অ্যারিস্টো ফুড নামে একটি অটো রাইচমিলের ২০ মেট্রিকটন চাল ফেরত দেয়া হয়েছে। সদর উপজেলা খাদ্যগুদামের মিটারে ওই চালের আর্দ্রতা ছিল ১৪.২। অ্যারিস্টো ফুডের পক্ষ থেকে তাদের চালে ১৩.৮ মাত্রার আর্দ্রতা রয়েছে বলে দাবি করা হয়। তারা ১৩.৮ আর্দ্রতার চাল দিতে মরিয়া হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু, সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রফিকুল আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা গুদামে গিয়ে ওই চালের আর্দ্রতা যাচাই করেন। সর্বশেষ, ১৪ আর্দ্রতার চাল দিতে বলা হয় তাদেরকে। উল্লেখ্য, সরকারি খাদ্যগুদামে ১৪ আর্দ্রতার চাল নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন