বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জনসাধারণের ওপর স্বাস্থ্যব্যয়ের চাপ কমাতে হবে

জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দের ক্ষেত্রে গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৮ শতাংশ বহন করছেন জনসাধারণ আর সরকার করছে মাত্রা ২৩ শতাংশ। এই প্রেক্ষাপটে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে এমনভাবে বরাদ্দ দেয়া দরকার যাতে করে মানুষের ওপর স্বাস্থ্যব্যয়ের এই চাপ হ্রাস পায়।

রবিবার রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ, ব্র্যাক জেমস পিগ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ^বিদ্যালয় এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের যৌথ আয়োজনে ‘স্বাস্থ্য বাজেটবিষয়ক জাতীয় সংলাপ’ শিরোনামে প্রাক-বাজেট আলোচনায় এ অভিমত ব্যক্ত করেন অংশগ্রহণকারীরা।

ঢাকায় ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত এই সভায় সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাবিবে মিল্লাত, এমপি (সিরাজগঞ্জ-২), রুমিন ফারহানা, এমপি (মহিলা আসন-৫০), এবং শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এমপি (গাইবান্ধা-১)। বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। আলোচনার শুরুতে স্বাস্থ্য বাজেটবিষয়ে মূলনিবন্ধ অনলাইনে উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। সংলাপ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচের থিমেটিক গ্রুপের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা হক।

সরকারের অর্থবিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য এবং মাঠ-জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে তৈরি মূলনিবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. আতিউর বলেন, সরকারের স্বাস্থ্য বাজেটে বর্তমানে ঔষধ ও পচনশীল চিকিৎসাসামগ্রী বাবদ যে বরাদ্দ আছে তা যদি তিন গুণ করা যায় এবং যদি উপজেলা পর্যায় থেকে কম্যুনিটি পর্যায় পর্যন্ত তিন ধরনের সরকারি সেবাকেন্দ্রে সকল শূন্যপদে দক্ষ জনবল নিয়োগ করা যায়, তাহলে মোট স্বাস্থ্যব্যয়ে জনসাধারণের অংশ ৬৮ শতাংশ থেকে কমে ৫১ শতাংশ হতে পারে। তবে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি পুরো স্বাস্থ্যখাতেই সংস্কারে মনযোগ দিতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

আরও পড়ুনঃ  অসময়ে বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ

ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, স্বাস্থ্যখাতের জন্য মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা তৈরি করা এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাতে স্বাস্থ্যখাতের চাহিদাগুলো প্রতিফলিত করার ওপর জোর দেন।

প্রতিবেশি ভূটান যেভাবে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছে এবং ভারতে নিম্ন-আয়ের মানুষের জন্য যে স্বাস্থ্যবীমার উদ্যোগগুলো নেয়া হচ্ছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশেও সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার পথে এগুনো দরকার বলে অভিমত ব্যক্ত করেন রুমিন ফারহানা।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেবল সরকারি সেবাকেন্দ্রের ওপর না চাপিয়ে সরকার ও ব্যক্তিখাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অংশীদারিত্বমূলক উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন।

অন্যান্য বক্তারা স্বাস্থ্য বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দেয়া, ব্যক্তিখাতে স্বাস্থ সেবাদানকারীদের মান-নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবাখাতে যথাযথ মনযোগ দেয়া ইত্যাদি বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

আনন্দবাজার/টি এস পি

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন