গুণগত মান বজায় থাকার পাশাপাশি টেকসই সড়কে রুপান্তরিত করার লক্ষে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে এই প্রথম সড়ক নির্মাণ কাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ঠিকাদার মাহমুদুল হাসান (মাহমুদ)। যা সাড়া ফেলেছেন উপজেলার মক্রবপুর, পেরিয়া ও রায়কোট উত্তর ইউপির লক্ষাধিক মানুষের মাঝে। ইতিমধ্যে এর সুফলও পাচ্ছেন তারা।
কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অ্যাসফাল্ট ব্যাচমিক্স প্ল্যান্টের মাধ্যমে বানানো হচ্ছে সড়ক নির্মাণের বিটুমিনাস উপকরণ। এছাড়া পেভার মেশিন, কম্প্রেসার, রোলার মেশিনসহ আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সড়কে সারফেস ওভারলেয়িংয়ের কাজ হওয়ায় সড়ক হচ্ছে টেকসই। এতে প্রতি কিলোমিটার সড়কে ব্যয়ও হচ্ছে আগের তুলনায় অনেক বেশি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সড়ক নির্মাণ হওয়ায় সন্তুষ্টি জানিয়েছে এলাকাবাসী ও পরিবহন চালকরা।
সরেজমিন দেখা যায়, নাঙ্গলকোট উপজেলার মক্রবপুর থেকে কাজী জোড়পুকুরিয়া হয়ে লক্ষ্মীপদুয়া বাজার হয়ে শরীফপুর ব্রিজ পর্যন্ত সাড়ে ৯ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। যার কাজ পান মদিনা কনস্ট্রাকশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক মাহমুদ।
সম্পূর্ণ কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত অ্যাসফাল্ট ব্যাচমিক্স প্ল্যান্টের মাধ্যমে বানানো হচ্ছে সড়কের সারফেস ওভার লেয়িংয়ের উপকরণ। এতে সঠিক তাপমাত্রায় মান নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এক্ষেত্রে সড়কে ব্যবহার করা হচ্ছে পেভার ফিনিশিং। এটা সড়কের উপরিভাগ সমানভাবে ওভার লেয়িং করে। এর ফলে সড়ক অত্যন্ত টেকসই ও মসৃণ হয়। এছাড়া কার্পেটিংয়ের আগে সনাতন পদ্ধতিতে রাস্তা পরিষ্কারের পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে আধুনিক কম্প্রেসার মেশিন।
নির্মাণ কাজে নিয়োজিত শ্রমিক খোরশেদ আলম জানান, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার কারণে রাস্তার কাজে গুণগত মান রক্ষা হচ্ছে। অত্যাধুনিক পেভার মেশিন দিয়ে কাজ করায় কাজের মান ভালো হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে দিনে দেড় কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং করা যায়।
লক্ষ্মীপদুয়া বাজার ব্যবসায়ী এনাম বলেন, এ প্রথম মানুষ ছাড়া মেশিনের সাহায্যে রাস্তা পাকাকরণ হয় তা দেখতেছি। আগে সড়কে খানাখন্দ থাকলেও এখন নেই। এতে কমেছে ভোগান্তি। কাজও শেষ হয়ে যাবে দ্রুত। এটাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ।
কয়েক জন সিএনজি চালক জানান, আগে সড়কে দুর্ঘটনা ঘটত। খানাখন্দে ভরা ছিল। এখন যেভাবে রাস্তার কাজ হচ্ছে তার গুণগত মান ভালো হচ্ছে। যাতায়াতে আগের চেয়ে কম সময় লাগবে।
মেরামত কাজে নিয়োজিত তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আশরাফুল হক বিদ্যুৎ জানান, নাঙ্গলকোটে এ প্রথম সড়ক নির্মাণ কাজে আধুনিক প্রযুক্তি পেভার মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ফলে কাজের গতি বাড়ে। গুণগত মান বজায় থাকার পাশাপাশি সড়ক হবে টেকসই।
এ বিষয়ে কনটেকদার মো. মাহমুদুল হাসান (মাহমুদ) বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নাঙ্গলকোট উপজেলায় সুনামের সহিত ঠিকাদারি করে আসছেন। বঙ্গবন্ধু ও তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে ভালোবাসেন মনে প্রাণে। কাজটি পাওয়ার পর সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই অর্থমন্ত্রীর আ হ ম মুস্তফা কামাল (লোটাস কামাল) এমপির নির্দেশনা মতে কাজের গুণগত মান বজায় থাকার পাশাপাশি টেকসই সড়কে রুপান্তরিত করার লক্ষে সড়কটিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করি। মাত্র ৬ মাসের মধ্যে শেষ হচ্ছে।
এ বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সড়ক নির্মাণ কাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে গুণগত মান বজায় থাকার পাশাপাশি সড়ক হবে টেকসই। যা সহজে নষ্ট হবে না। আশা করি বাঁকি ঠিকাদার যারা আছেন তারাও সড়ক নির্মাণ কাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার জন্য চেষ্টা করবেন। এতে শ্রমিকও কম লাগে, সড়কও সমান হয়।