পঞ্চগড় সদর উপজেলার টুনিরহাট সাব রেজিস্ট্রি অফিসে দীর্ঘদিন ধরে জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা জমি সাব রেজিস্ট্রি করতে পথে পথে হয়রানী শিকার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঠিক কাগজপত্র, খাজনা খারিজ নামজারি ডিসি আর ওয়ারিশন সনদপত্র থাকার পরও দিতে হয় প্রতিটি দলিলে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ। এমন অভিযোগ করেন টুনিরহাট সাব রেজিস্ট্রি অফিস এলাকার রাধা বল্লভ শাহা মৌজার ভূমি মালিক হাচেন আলী।
একইভাবে সুন্দর মনি লস্করা মৌজার ভূমি মালিক ইদ্রিস আলী জানান, জমির সঠিক কাগজপত্র থাকার পরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে জমি রেজিস্ট্রি করতে হচ্ছে দলিল প্রতি চার থকে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষের বিনিময়ে।
ডানাকাটা মৌজার ভূমি মালিক এরশাদ আলীর অভিযোগ, দলিল লেখকদের মাধ্যমে দলিল চেক ফি বাবদ পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে জমি ক্রয়-বিক্রয় করতে হয়। দলিলের চেক ফি টাকা অফিস করণিক বা অফিস সহকারী আদায় করে সাব রেজিস্ট্রারের অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে গুনে বুঝে দেন।
হাচেন, ইদ্রিস আর এরশাদ আলীর মতো অনেক সচেতন গ্রাহকের অভিযোগ, সাব রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতা, বেপরোয়া মনোভাবের কারণে অতিষ্ঠ হচ্ছেন জমি ক্রেতা-বিক্রেতারা। কাগজপত্রের নানান জটিলতার অজুহাত দেখিয়ে গ্রাহকদের পথে পথে হয়রানি করা হচ্ছে।
আরাজী মাড়েয়া মৌজার ভূমি মালিক শাহ আলম জানান, টুনিরহাট সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী বা করণিক প্রতিদিন দেরি করে অফিসে আসেন। আবার সময়ের আগেই চলে যান। ভূমি গ্রহকরা অফিসে এসে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের খুঁজে পান না। বড়কর্তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় বাকি কর্মকর্তা কর্মচারীরা বেপরোয়া আচরণ করেন সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে।
শাহ আলম আরো অভিযোগ করেন, অফিসের দলিল রেজিস্ট্রি হওয়ার পর ৫২ ধারা দলিল ফেরত রশিদটি নিতে দিতে হয় প্রতিটি দলিলেল ৫০ থেকে ১০০ টাকা ফি। যা রেজিস্ট্রি আইনে কথাও উল্লেখ নেই। দলিল ফেরত নেওয়ার সময় দলিল প্রতি দিতে হয় দুশ থেকে তিনশ টাকা ফি। যা রেজিস্ট্রি আইনে কথাও উল্লেখ নেই।
টুনিরহাট সাব রেজিস্ট্রি অফিসের অনিয়ম দুর্নীতি স্বেচ্ছাচারিতা ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ঠ হয়েছে সেবাগ্রহণকারীরা খণ্ডকালিন সাব রেজিস্ট্রার শিরিনা আক্তারের সাথে কথা বললে তিনি সব কিছু এড়িয়ে যান। খন্ডকালিন টুনিরহাট সাব রেজিস্ট্রার বোদা উপজেলার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের স্থায়ী সাব রেজিস্ট্রার। অজ্ঞাত কারণে অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে পঞ্চগড় সদর উপজেলা টুনিরহাট সাব রেজিস্ট্রি অফিসে খন্ডকালীন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
বিষয়টি নিয়ে জেলা রেজিস্ট্রারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, টুনির হাট সাব রেজিস্ট্রারকে নিয়ন্ত্রণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আইন মন্ত্রণালয় কোনো সাব রেজিস্ট্রারের বিরূদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
আনন্দবাজার/শহক




