ঢাকা | শনিবার
৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাশের হার বাড়লেও কর্মদক্ষতা বাড়েনি

পাশের হার বাড়লেও কর্মদক্ষতা বাড়েনি

মানবজাতির দীর্ঘ ইতিহাস বলছে, আমরা নানা দুর্যোগ থেকে সবসময়ই বেঁচে ফিরেছি, ঘুরে দাঁড়িয়েছে নতুন উদ্যমে। সারা বিশ্বের সবকিছু এবং উচ্চশিক্ষার ওপরে যে প্রভাব পড়েছে, তা থেকে উত্তরণ ঘটবেই। সামনের কয়েকটা বছর খুবই কঠিন। তবে, আমরা উঠে দাঁড়াবই। ইতিহাস তাই-ই বলে।

গত রবিবার (২২ মে) দুপুরে ফরিদপুরের রাজেন্দ্র কলেজে ‘করোনা পরবর্তী বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সংকট ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গৃহিত পদক্ষেপ’ শীর্ষক এক সেমিনারে আলোচকগণ এসব অভিমত দেন। কলেজটির সমাজকর্ম বিভাগ এ সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুর রহমান সুমন। প্রবন্ধে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে করোনার ভয়াবহতা কিছুটা নিম্নগামী হলেও ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের করোনা ভাইরাস এখনও আমাদের পরীক্ষা নিয়েই যাচ্ছে। এ বৈশ্বিক সমস্যা সফলভাবে মোকাবিলা করতে আমাদের মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ হতে হবে, কাজ করতে হবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে।

করোনায় শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়, করোনার মধ্যে সারা বিশ্বেই শিক্ষা ব্যবস্থা কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি অপেক্ষাকৃত বেশি। অধিকন্তু, কিশোর-কিশোরীরা সরকার প্রদত্ত সার্টিফিকেট ও জিপিএ-৫ নিয়ে বেরোচ্ছে, তবে সেই সাপেক্ষে তাদের শ্রমবাজারভিত্তিক কর্মদক্ষতা তৈরি হয়নি। সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় এ সংকট দৃশ্যমান। তাইতো করোনাসৃষ্ট আজকের এ পরিস্থিতি থেকে আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো, পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাপনাকে ঢেলে সাজাতে হবে; ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা বদলাতে হবে। অন্যদিকে, শিক্ষার অংশগ্রহণের হার বেড়েছে কিন্তু মানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাইতো পরিবর্তন দরকার শিক্ষা ব্যবস্থায়।

সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কলেজটির অধ্যক্ষ প্রফেসর অসীম কুমার সাহা। এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, করোনায় ফরিদপুরের সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ২৫ জন শিক্ষার্থীর কোনো খোঁজ মিলছে না। তারা হারিয়ে গেছে। তিনি বলেন, গত দুই বছর যাবৎ তারা হারিয়ে গেছে। তারা কলেজে আসছে না। কোনো একাডেমিক সেশনে থাকছেনা। পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেনা। তাদের মোবাইলে ফোন দিয়েও তাদের পাচ্ছিনা।

সেমিনারে প্রধান আলোচক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা আখতার বলেন, বর্তমানে পুরুষেরাও নারীর হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন। রাজধানী ঢাকাতে ৬০ ভাগ পুরুষ নারীর নির্যাতনের শিকার। নারীবাদী মানে পুরুষকে অস্বীকার করা না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বাবা, ভাই, স্বামী সকলেই পুরুষ। তাদেরও দরকার রয়েছে। বরং নারী শিক্ষার প্রসার দরকার এ নিগ্রহ ও নির্যাতনের প্রতিকারের স্বার্থে।

সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এ.বি.এম সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনায় অংশ নেন, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক এস,এম আব্দুস সালাম ও শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মো. আশরাফুল আজম শাকিল প্রমূখ। এসময় কলেজেটির বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন