ঢাকা | মঙ্গলবার
১১ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৬শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা

মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা
  • দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি

সিলেটে খাড়ার উপর মরার ঘা বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে সিলেটের বেশিরভাগ উপজেলার মানুষের মধ্যে যখন হাহাকার, তখন হঠাৎ করে বেড়েছে সকল নিত্যপণ্যের দাম। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সকল পণ্যের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সিলেটে সাধারণ মানুষের জন্যে জীবনযাপন খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সিলেটের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, ডাল, আটা, সবজি, ডিম, মুরগির দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য- সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি। আরো বাড়বে দ্রব্যমূল্য।

ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, কয়েক দিন ধরে চালের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে সব ধরনের চালের। পাইকারি বাজারে দাম বাড়ায় খুচরা বাজারেও প্রতিকেজি চালের দাম ৩ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত বেশি দেখা গেছে। ধানের ভরা মৌসুমে চালের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, বাজারে নতুন চাল এলে দাম অনেকটা কমে যায়। কিন্তুএ বছর ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে। প্রতিদিন সব ধরণের চালের দাম ১-২টাকা করে বেড়েই চলেছে।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মাসে আটাশ চাল প্রতি কেজি ৪২ টাকা বিক্রি হয়েছিলো। এ মাসে বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা দরে। শুধু আটাশ-ই চাল নয়, মাঝারি মানের চাল ৫৩-৫৫, মিনিকেট চাল ৬৮, নাজিরশাইল ৮০-৮২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিনিকেট চালের বস্তা ২৯৫০-৩০০০ টাকা ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের দুটি ব্র্যান্ডের চাল বিক্রি হচ্ছে ৩১৫০ টাকায়। মাঝারি চাল (বি আর আটাশ) বস্তা ২২০০-২২৫০ এবং পাইজাম ২১০০-২১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভারত থেকে গম রফতানি বন্ধের ঘোষণায় এক সপ্তাহে বাজারে আটা-ময়দার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। খুচরা বাজারে আটার দাম কেজিতে ১০-১২ টাকা এবং ময়দার দাম ৬ টাকা বেড়েছে। নগরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি আটার দাম ছিলো ৩২-৩৩ টাকা। হঠাৎ মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে ক্রেতাদেরকে ৪২-৪৫ টাকা কেজিদরে আটা কিনতে হচ্ছে। তবে ভারত ফের গম রফতানি শুরু করায় দাম দু-একদিনের মধ্যে কমতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা আশা প্রকাশ করেছেন।

বাজারে চাইনিজ রসুনের দাম বেড়ে প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। দেশি রসুনের মূল্য কেজিপ্রতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ডালের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে দেশি মসুরের ডাল ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ইন্ডিয়ান ডালের মূল্য ১১০ টাকা প্রতি কেজি। বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। প্যাকেট চিনির মূল্য ৮৫-৯০ টাকা প্রতি কেজি।

পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে। ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আমদানি বন্ধ থাকায় পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে বেশি বাড়ার শঙ্কা নেই। আমদানি শুরু হলে পেঁয়াজের দর কমবে। বাজারে মুরগির দামও বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির কেজি প্রতি মূল্য ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। সোনালি মুরগির দর সাইজ ভেদে প্রতি পিস ২০০ থেকে ৩১০ টাকা। লাল মুরগির পিস সাড়ে ৪ শ টাকা। গরুর মাংস ৭০০ এবং খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ডিমের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। লাল ডিমের ডজন ১২০, হাঁসের ডিমের ডজন ১৬০, দেশি মুরগির ডিমের ডজন ১৯০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, বন্যার কারণে বাজারে সবজির দাম চড়া। সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। বাজারে লম্বা এবং গোল বেগুনের কেজি ৮০ টাকা, টমেটো ৬০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, চায়না গাজর ১৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, পটল এবং ঢেঁড়স ৫০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, পেঁপে ৫০ টাকা, বরবটি এবং শসা ৬০ টাকা, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকা, লাউ আকারভেদে ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচামরিচ প্রতিকেজি ১৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। লেবু প্রতি হালি ২০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাড়েনি আলুর দাম। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন