বৃষ্টি না হলেও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি পানির কারনে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিলেট নগরীতে আরও দুই ইঞ্চি পানি বেড়েছে। এছাড়া বন্যার পানি বাড়ছে জেলার আট উপজেলাও।
এই অবস্থায় সিলেট জেলা এবং মহানগরের প্রায় ১৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব বন্যা দুর্গত মানুষজন বিশুদ্ধ পানি এবং শুকনো খাবারের সংকটে পড়েছেন।
আজ বুধবার দুপুরে দেখা গেছে, নগরের আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। রাস্তাঘাট পানির নিচে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও জলমগ্ন অবস্থায় দেখা গেছে। এতে নগরবাসী চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। এই অবস্থায় নগরের ১৫ স্কুলসহ ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজনও খাদ্য সংকটে রয়েছেন।
সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ড নগরের সবচেয়ে বেশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ওয়ার্ডের মসজিদে মসজিদে মাইকিং করে বলা হচ্ছে বন্যার পানি দ্রুত বাড়ছে। বাসার জিনিসপত্র নিরাপদে রেখে আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে চলে যেতে।
সিটি করপোরেশনের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তারেক উদ্দিন তাজ খাদ্য সংকটের কথা স্বীকার করে জানান, সবচেয়ে বেশি বন্যায় ক্ষতি হয়েছে আমার ওয়ার্ড। এখানকার প্রায় ৯৮ ভাগ এলাকাই এখন পানির নিচে। এ ওয়ার্ডে ৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত সিটি করপোরেশন থেকে মাত্র ১৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার পেয়েছি। পাশাপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে আরও ৭০০ প্যাকেট বিতরণ করেছি।
তিনি আরও বলেন, এখানে চার হাজার প্যাকেট খাবার প্রয়োজন। যা পেয়েছি তা খুবই কম। আমাদের চাহিদার কথা সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টদের জানানো হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইয়িদ চৌধুরী বলেন, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টি কমছে না। তাই পাহাড়ি ঢল নামছে এবং আমাদের দেশেও পানি বাড়ছে।
সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান জানান, কিছু সরকারি স্থাপনায় পানি উঠলেও সেবা ব্যাহত হচ্ছে না। সব প্রতিষ্ঠানেরই স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তবে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
বন্যায় জেলা জুড়ে ১৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক জানান, এসব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএনওদের সার্বক্ষণিক নজরদারি করার নির্দেশনা দেওয়া আছে।
আনন্দবাজার/টি এস পি