গাইবান্ধার দারিয়াপুরের ঐতিহাসিক মীরের বাগানকে ঘিরে প্রতি বছর ১লা বৈশাখ শুরু হয় ইচ্ছে পুরনের মেলা। মীর বাগানের সঙ্গে ইতিহাস খ্যাত মীরজুমলার সম্পর্ক আছে বলে কিংবদন্তী রয়েছে। প্রতিবছর বৈশাখ মাসে মেলায় আসেন মানত করতে। মনের আশা পুরনের আশায় পশু কোরবানী দিয়ে বিতরণ করেন শিরনি। ইচ্ছে পুরনের মেলা শেষ হচ্ছে আজ ৩১ বৈশাখ ১৪ মে।
গাইবান্ধা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত মীরের বাগান। প্রবেশ পথেই তোরণ রয়েছে। বিশাল আম বাগানের জন্য এক সময় মীরের বাগানের খ্যাতি ছিল। মসজিদ সংস্কার করার সময় ১০১১ সাল লেখা একটি কালো পাথর পাওয়া যায়। পাথরের গায়ের লেখা অনয়ায়ী ১০১১ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হয় বলে ধারনা করা হয়। মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন পীর শাহ সুলতান গাজী, মোশারফ হোসাইন ও সরফ উদ্দিন হোসাইন। বাংলা ১৩০৭ সালে কলকাতার পীর সৈয়দ ওয়াজেদ আলী বাহারবন্দ পরগনার ঘন জঙ্গল থেকে পীর ইবনে শরফুদ্দিনের স্মৃতিবাহী কবর ও মসজিদের ধ্বংসাবশেষ উদঘাটন করে।
এ এলাকার প্রবীন মানুষ সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ সিদ্দিক বলেন, ৩৯৫ শতাংশ এলাকা জুড়ে অবস্থিত এ মাজার ও সমজিদের সঙ্গে শাহ সুলতান গাজী নামে একজন ধর্মপ্রচারক ও বীর যোদ্ধার সর্ম্পকের কথা জানা যায়।
নাট্য ও সাংস্কৃতিক কর্মী লক্ষন রায় বলেন, ছোট বেলা থেকে দেখে আসছেন মাজারকে কেন্দ্র করে এখানে মেলা বসে। রোগ বালাই দূর হয় এ ধারনা থেকে মেলায় আসেন নারী পুরুষ ।
প্রচলিত আছে তিনি এবং তার অনুসারিরা ধর্ম প্রচার করতে এসে মৃত্যু হলে এখানে সমাহিত তাদের করা হয়। সেই থেকে ময়মনসিংহের ক্বারী করিম বক্সের উত্তরাধিকারীগণ বংশ পরম্পরায় মোতওয়াল্লী হিসেবে এ ওয়াকফ সম্পত্তিটি রক্ষনাবেক্ষণ করে আসছেন। সেই সময়ের ইট দিয়ে এক কক্ষ বিশিষ্ট মসজিদ, উপড়ে তিনটি গম্বুজ ও আজান দেয়ার জন্য পাশে একটি মিনার রয়েছে। মসজিদের প্রবেশ পথের দক্ষিণ পাশে তিন জনের কবর রয়েছে। সেগুলো পরবর্র্তী পর্যায়ে সংস্কার করা হয়। কথিত আছে এ মীরের বাগানের মাজার এ কোনো মানত করলে তার মনের আশাপূর্ণ হয় বলে লোকমুখে শোনা যায়। সে কারণে আস্তে আস্তে সেখানে প্রতি বৈশাখ মাসে ইচ্ছা পূরনের মেলা বসে।
ঘাগোয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুজ্জামান রিংকু, বলেন দীর্ঘদিন থেকে মানুষ এ মাজারে আসেন তাদের রোগবালাই, সন্তান হওয়ার আশা নিয়ে। অনেকই বলেন, তারা তাদের মনের আশাপূর্ণ হয়েছে। সে কারনে প্রতি বছর আসেন মনের আশা পূরনের আশায়।