ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইফতারে সরগরম রাজনীতি

ইফতারে সরগরম রাজনীতি

করোনা ভাইরাসের কারণে বছর দুই মানুষ ছিল ঘরবন্দি। সে কারণে দেশে সব ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড প্রায় বন্ধই ছিল বলা চলে। রমজান মাসে ইফতার নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সরব হয়ে উঠলেও করোনার কারণে হয়নি। তবে, এবারের চিত্র আলাদা। করোনার প্রকোপ কেটে যাওয়ায় দেশে আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেতারা সক্রিয় হয়ে শুরু করেছেন। আর তাই তো, ইফতারে সরগরম হয়ে উঠছে রাজনীতি।

দেশব্যাপি বিভিন্ন দলের তৃণমূল পর্যায়ে ইফতারে সরগরম হয়ে উঠছে রাজনীতি। বর্তমানে ক্ষমতাসীম দলের সংসদ সদস্য ও মনোনয়ন প্রত্যাশীরা ইফতার ঘিরে নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা করছেন। সেই সঙ্গে বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ অন্যসব রাজনৈতিক দলের  নেতারা ইফতারের মাধ্যেমে নিজ এলাকায় সাড়া দিয়ে যাচ্ছেন। ইফতার ঘিরে নেতারা দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আলোচনা সভা করছেন।

করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপ কেটে যাওয়ায় রাজশাহীতে সব ধরনের রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড আবার শুরু হয়েছে। এখন ইফতার আয়োজনের মাধ্যমে সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে বড় রাজনৈতিক দলের নেতারা তৎপর হয়ে উঠেছেন। ইফতার ঘিরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে তারা মতবিনিময় ও আলোচনা করছেন।

আগামী বছরের মাঝামাঝি রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন এবং আগামী বছরের শেষে জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখেই এসব আয়োজন করা হচ্ছে। মূলত ইফতার অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মঞ্চ।

রাজশাহী জেলা পুলিশের ইফতার অনুষ্ঠান ছিল ১১ এপ্রিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহীর সব আসনের সংসদ সদস্য। পরদিন (১২ এপ্রিল) রাজশাহী মহানগর পুলিশের ইফতার অনুষ্ঠানেও জেলার সব সংসদ সদস্য, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতারা। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সরকারের বিভিন্ন সাফল্য তুলে ধরে বক্তব্য দিচ্ছেন।

চলতি বছর প্রথম রোজা থেকেই পথচারী ও এলাকাবাসীর মাঝে ইফতার বিতরণ করছেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। ইফতারের আগে আলোচনা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানও করছেন।

ডাবলু সরকার বলেন, আমরা সারা বছর মানুষের জন্য কাজ করি। রোজার মাসেও তাদের পাশে দাঁড়ানোর মানসিকতা থেকে প্রতিদিন ইফতার বিতরণ করছি। এতে এলাকার মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমার যোগাযোগটা বাড়ছে।

রাজশাহী মোহনপুর উপজেলায় ইফতার অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা সঙ্গে স্থানীয় (রাজশাহী-৩) আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন অংশ নেন। ইফতার পূর্ব আলোচনা সভায় নেতারা আগামী সব নির্বাচনে প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের জোরালো আহ্বান জানান।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা বলেন, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর বড় পরিসরে বসার সুযোগ হয়নি। তাই এবার ইফতার অনুষ্ঠানগুলোতে খোলামেলা কথা বলা ও মতবিনিময়ের সুযোগ হচ্ছে। এ অনুষ্ঠানগুলোকে রাজনৈতিক আলাপ আলোচনার মঞ্চ হিসাবে পাওয়া যাচ্ছে।

নওগাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গায় ইফতার আয়োজনে অংশ নিচ্ছেন খাদ্যমন্ত্রী ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার। ২১ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) শ্রীমন্তপুর হাইস্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ ইফতারের আয়োজন করে। ইফতারের আগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় খাদ্যমন্ত্রী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে নৌকায় ভোট দেওয়ার বিকল্প নেই। জনগণকে এটাই বোঝাতে হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল প্রতিদিনই উপজেলার কোথাও না কোথাও দলীয় ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।

বিএনপির নেতারাও ইফতারের আয়োজন করছেন। এর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। ১৫ এপ্রিল বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু রাজশাহীতে নগর বিএনপি আয়োজিত আলোচনা ও ইফতার অনুষ্ঠানে যোগ দেন। পরদিন তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপি ইফতার অনুষ্ঠানে অংশ নেন। বিএনপি নেতা দুলু বলেন, ইফতারের মতো সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ছাড়াও কথা বলার সুযোগ হচ্ছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরাও এর মধ্যদিয়ে উজ্জীবিত হচ্ছেন। রোজার মাসই তিনি রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলায় দলীয়ভাবে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠানগুলোতে যাবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন