- সেতু সংস্কারে উদ্যোগ নেই, দুর্ভোগ চরমে
- বন্যায় স্রোতে ভেসে গেছে সেতুর মাঝের অংশ
- দুর্ভোগ চরমে
জেলার মেলান্দহে ঝারকাটা নদীর উপর নির্মিত সেতুটি চার বছরেও কোনো সংস্কার কাজ হয়নি। সংস্কার না হওয়ার ফলে এলাকার জনসাধারণ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পথচারি যাতায়াতে প্রতিদিন চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এতে এলাকাবাসীসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় জনজন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পাঠানপাড়া গোদার বাজার এলাকায় নদীতে এ সেতুটি রয়েছে। বিগত চার বছর আগে ২০১৮ সালের ভয়াবহ বন্যায় নদীর স্রোতে সেতুটির মাঝের অংশ ধসে যায়। এর পর থেকে এলাকাবাসী দুর্ভোগে রয়েছে।
নদীর দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে ঘোষেরপাড়া মিলন বাজার ও উত্তরে রয়েছে গোদার বাজার ও ইউনিয়নের পুরাতন তালুকপাড়া বাজার। পূর্বে ছবিলাপুর, বীর ঘোষেরপাড়াসহ পাঁচ গ্রামের ৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রতিদিন উপজেলা সদরে যাতায়াত ও বিভিন্ন কাজে নদী পাড়ি দিতে হয়। অন্যদিকে ঘোষেরপাড়া, পূর্ব ছবিলাপুর, টিকাদার পাড়ার প্রায় ছয় গ্রাম থেকে প্রতিদিন তিন/চার শতাধিক শিক্ষার্থী আসে বেলতৈল উচ্চ বিদ্যালয় ও দাখিল মাদরাসায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, নদী পাড়ি দিতে দক্ষিণ পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে এক দল শিক্ষার্থী। উত্তর পাড়ের বিদ্যালয়ে আসবে তারা। এখন তাদের পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা। প্রতিদিন নৌকা দিয়েই পার হতে হয় তাদের। একটি ছোট নৌকায় গাদাগাদি করে উঠেছে প্রায় ১৫ থেকে ২০ জন।
কথা হয় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান, নবম শ্রেণির শিল্পি আক্তার ও অস্টম শ্রেণির নাজনীন আক্তারের সঙ্গে। তারা জনান, সকাল আটটা সাড়ে আটটার মধ্যে পাড়ে এসে নৌকায় নদী পার হওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। কার আগে কে উঠবে এ নিয়ে চলে তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা। প্রতিদিন নৌকায় নদী পার হওয়ার সময় খুব ভয় লাগে। অনেকে নদী পার না হয়ে পাঁচ কিলোমটার পথ ঘুরেই বিদ্যালয়ে যায়।
ঘোষেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা খোশমামুদ মন্ডল জানান, সেতু সচল না থাকায় এখন ৫ থেকে ৬ কিলোমিটার পথ ঘুরে জেলা, উপজেলা সদর ও ইউনিয়ন পরিষদ বেলতৈল বাজারে যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে রাতে নৌকায় পারাপার খুবই ঝূঁকিপূর্ণ।
বেলতৈল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ৭০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে নদীর পশ্চিম পাড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় সাড়ে তিনশত জন শিক্ষার্থী ও ৩ জন শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসেন। নদীর পারাপারে ভরসা ছিল ঝুলন্ত সেতুটি। এখন সেতু সচল না থাকায় তাদের দুর্ভোগ চরমে।
ঘোষেরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম লিটু বলেন, বন্যায় সেতুটি ভেঙে গেছে, ওই সেতুর ওপর দিয়ে কয়েকটি গ্রামের জনগন চলাচল করত। এখন সেতু ভাঙা থাকায় এলাকার লোকজন মারাত্বক দুর্ভোগে পড়েছে। সেতুটি সংস্কার করা হলে মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিরল রায় বলেন, সেতুটি নতুন করে নির্মাণ করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখনো কাজের কোনো বরাদ্দ বা আদেশ আসেনি। বরাদ্দ আসলেই ওই স্থানে নতুন সেতু নির্মাণ করা হবে।
মেলান্দহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুটি সংস্কার করা অথবা আরেকটি নতুন সেতু নির্মাণের জন্য জেলা প্রশাসকসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখন বরাদ্দ আসলেই কাজ শুরু হবে।