ড. যশোদা জীবন দেবনাথ। মানবিক সেবা নিয়ে প্রতিনিয়তই জনগণের কাছে যাচ্ছেন। যেকোন প্রয়োজনে এলাকায় ছুটে যাচ্ছেন। অসহায়দের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। বাড়িয়ে দিচ্ছেন সহযোগীতার হাত। মানবিক কাজে বারবার প্রশংসিতও হয়েছেন তিনি। করোনায় কর্মহীন হাজার হাজার অসহায় মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিয়ে তিনি একাধিকবার খবরের শিরোনামও হয়েছেন।
এবার পুলিশের কল্যাণেও এগিয়ে এসেছেন তিনি। স্থাপনাসহ লিখে দিয়েছেন নিজের ব্যবহৃত পৈতৃক ৫০ শতাংশ জমি। জেলা পুলিশের আধুনিক তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের জন্য অনুদান হিসাবে তিনি এ সম্পত্তি জেলা পুলিশকে রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার আলিমুজ্জামানের কাছে দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করায় তার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জেলাব্যাপি ভূয়সী প্রশংসাও অর্জন করেছেন।
গতকাল শুক্রবার ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জমির দলিল হস্তান্তর করেন তিনি। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জামাল পাশা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) ইমদাদ হোসেন, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুলসহ পুলিশ কর্মকর্তা ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদপুর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অনুদান হিসাবে পাওয়া ওই জমির ওপর নির্মাণ করা হবে আধুনিক মানের পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। যেখানে জেলার সকল থানার পুলিশ কর্মকর্তারা জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে উন্নত প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। এছাড়া জনকল্যাণমূলক কাজেও ব্যবহার করা হবে জমিটি।
জমির বাজার মূল্য কয়েক কোটি টাকা হলেও তা দান করার পেছনে মহৎ উদ্দেশ্য আছে বলে জানিয়েছেন যশোদা জীবন দেবনাথ।
তিনি মনে করেন, ‘ পুলিশ বা সরকারি কর্মকর্তা এমনকি এমপি মন্ত্রী না হয়েও যে জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত হতে পারা যায়, এটি তার একটি উদাহরণ।’ জানা গেছে, দানকৃত সম্পত্তি ফরিদপুর কোতয়ালী থানার অন্তর্গত ১নং তফশিল ধােপাডাঙ্গা মৌজার জে,এল নং- সাবেক ৮০, হাল ২৬। এস,এ ১২৫৭, বি,এস চূড়ান্ত ৬৬৭, প্রস্তাবিত ১৭৫২ নং খতিয়ান। জমির পরিমান ৫০ শতাংশ।
ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, ওই এলাকায় একটি পুলিশ ফাঁড়ি নির্মাণের জন্য ৪ কোটি টাকা দামের আমার নিজের জমি আজ শুক্রবার জেলা পুলিশকে রেজিস্ট্রি করে দিলাম। স্থাপনাও করে দিয়েছি। ফাঁড়ি অনুমোদন হলে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও দেয়া হবে। জমি দানের বিষয়টিকে স্থানীয় পুলিশ ও এলাকাবাসী বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশংসা করেছেন। এ ধরনের উদ্যোগ মহৎ ও বিরল। এ জনহিতকর সমাজের অন্যান্য ধণাঢ্য ব্যক্তিদের মাঝে উদ্যম সৃষ্টি করবে এবং জনসেবামূলক কাজে নিজেদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে উৎসাহিত করবে বলে মনে করেন জেলার পুলিশ কর্মকর্তারা। ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান বলেন, এভাবে সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে সমাজের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। বর্তমানে ফাঁড়ি অনুমোদন দেয়া হয় না, তাই ওই জমিতে একটি পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র চালু করা হবে। যা কোতয়ালী থানার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তদন্ত কেন্দ্র থেকে সাধারণ মানুষ সকল ধরনের সহযোগিতা পাবেন, শুধুমাত্র মামলা দায়ের করা ছাড়া। উল্লেখ্য, লেখক ড. যশোদা জীবন দেবনাথ’কে বাংলাদেশ ডিজিটাল ব্যাঙ্কিং জগতের প্রবক্তা বলা হয়ে থাকে। তিনি বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালক। তার প্রতিষ্ঠান টেকনো মিডিয়া লিমিটেড দেশের ব্যাংকগুলোর এটিএম মেশিন ও কার্ডের সিংহভাগ সরবরাহ করেন।