শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাজে আসছে না ৪৫ লাখের স্লুইস গেট

কাজে আসছে না ৪৫ লাখের স্লুইস গেট

জমির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খাঁড়িতে স্লুইস গেইট হবে। খরা মৌসুমে এ স্লুইস গেটের মাধ্যমে আবাদি জমিতে সেচের সুব্যবস্থা হবে। যার জন্য সেখানে তৈরি করা হয় একটি স্লুইস গেট। তবে গত ১০ বছর ধরে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্লুইস গেইটটি কৃষকের কোনো কাজে আসে নি। অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে থাকা স্লুইস গেটটির অবস্থান দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ২নং কাটলা ইউনিয়ন ও ৬নং জোতবানি ইউনিয়নের জোতবানী ও শৈলান গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া খাঁড়ির উপর নির্মিত।

এলাকার কৃষকরা দাবি করছেন, সরকার এতো টাকা খরচ করে স্লইস গেইটটি কেনো তৈরি করেছেন তা আমাদের জানা নেই। আর এটি সরকারের অর্থ অপচয় ছাড়া কিছুই নয়।

সরেজমিনে জানা যায়, ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) এর অর্থায়নে ৪৫ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩০ টাকা ব্যয়ে সুইস গেইটটি নির্মাণ করা হয়। ‘চিরির খাল ডাব্লিউআরএস নির্মাণ’ প্রকল্প নাম দিয়ে নির্মিত স্লুইস গেইটির নির্মাণ কাজ শেষ হয় ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর। এটি নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন নজরুল ইসলাম নামে একজন ঠিকাদার। বর্তমানে খাঁড়িতে হাঁটু পরিমাণ পানির প্রবাহ থাকলেও আবারও সেখানে নয় লাখ টাকা খরচ করে স্লুইস গেইটের উত্তর ও দক্ষিণ দিকের পশ্চিম পাড়ে দায়সারাভাবে এক বর্গফুট সাইজের সিসি ব্লক বসানোর কাজ চলমান রয়েছে। এটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছেন দিনাজপুরের মেসার্স মাহি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অপ্রয়োজনীয় স্লুইস গেইটের পাশে আবারও কেন সরকারের এত টাকা খরচ করে পাড় রক্ষার নামে ব্লক বসানোর কাজ করানো হচ্ছে এর কোনো সদুত্তোর দিতে পারেননি উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুনঃ  জনসাধারণের ওপর স্বাস্থ্যব্যয়ের চাপ কমাতে হবে

জোতবানী গ্রামের কৃষক শামসুল মন্ডল বলেন, স্লুইস গেইট তৈরি করার পর থেকে এটি আমাদের কোনো উপকারে আসে নাই। সরকার অযথায় এখানে এটি তৈরি করে লাখ লাখ টাকা নষ্ট করেছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে খাঁড়িটি খনন না করায় খরা মৌসুমে এ খাঁড়িতে কোনো পানি থাকে না। ফলে আমরা রবি শস্য উৎপাদনের সময় জমিতে পানি সেচ দিতে পারি না।

এলাকার কৃষকরা দাবি করছেন, ৪৫ লাখ টাকা খরচ করে খাঁড়ির উপর অপরিকল্পিতভাবে একটি স্লুইস গেইট তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে খাঁড়িটির অনেক জায়গা পলিমাটি ও আবর্জনা দিয়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে সময়মত পানি থাকে না।

উপজেলা প্রকৌশলী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল সাদিক বলেন, চিরির খালের উপর স্লুইস গেইটটি কেনো নির্মাণ করা হয়েছে- তা আমার জানা নেই। তখন তো আমি এ উপজেলায় ছিলাম না। যতদূর জানি, স্থানীয় জোতবানি গ্রামের পাবসস (পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি) এখন এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে আছেন। তবে সমিতির পক্ষে এটি খোলা ও বন্ধ করার দায়িত্বপ্রাপ্তকে-তা আমি জানি না। রুটিন মেইনটেইন্সের কাজ হিসেবে বর্তমানে স্লুইস গেইটের উভয় পাশে ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে চিরির খালের পাড় রক্ষায় ব্লক বসানোর কাজ চলছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন