ঢাকা | শনিবার
২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খননের মাটিতেই নদী ভরাট

খননের মাটিতেই নদী ভরাট

বর্ষায় স্রোতস্বিণী আর শুকনো সময়ে ধু ধু বালির মাঠে পরিণত হয় নেত্রকোণার হাওর অধ্যুষিত খালিয়াজুরী উপজেলার পিয়াইন নদী। উপজেলার চাকুয়া ইউনিয়নের নদীপথ নির্ভর বিখ্যাত লেপসিয়া বাজার ঘেঁষে বয়ে গেছে নদীটি। এখানকার সবচেয়ে বড় বাজার আর হাওরাঞ্চলের কৃষকদের সুবিধার্থে সরকারি ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নদীটি খনন করা হয় গত বছর। তবে খনন কাজ শেষ হওয়ার মাত্র এক বছরের মধ্যেই আবারো ভরাট হয়ে ধু ধু বালির মাঠে পরিণত হয়েছে।

ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অভিযোগ, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে নদী খনন করা হয়নি। যার জন্য মাত্র এক বছরের মাথায় ভরাট হয়ে গেছে নদীর অধিকাংশ স্থান। নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় খনন কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে কাজ করেনি এমন অভিযোগ তাদের।

নেত্রকোণা পাউবো জানায়, হাওর এলাকার বন্যা ব্যবস্থাপনা ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পিয়াইন নদীর ৪ দশমিক ৯২ কিলোমিটার ও ২৪ কিলোমিটার খাল খনন এবং ৯ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে ২০২০-২১ অর্থবছরে সম্পন্ন হয় খনন কাজ। তবে সরেজমিনে দেখা যায়, ধনু নদী থেকে উৎপত্তি হয় পিয়াইন নদী। এর উৎপত্তিস্থল থেকে শুরু করে নদীপথ নির্ভর লেপসিয়া বাজার ঘেঁষা প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকায় খনন কাজের চিহ্নমাত্র নেই। দেখে বুঝার উপায় এখানে কোনো খনন কাজ হয়েছে। কোথাও মরুভূমির মত ধু ধু বালুময় মাঠ আবার কোথাও নাম মাত্র ধারা প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নামেমাত্র খনন কাজ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তাই নদীটি খনন করার পরেও বালু উড়ছে নদীর তলায়, মানুষ পায়ে হেঁটে এপাড় থেকে ওপাড়ে যাচ্ছে। পানি না থাকায় পণ্যবাহী নৌকা বাজারের ঘাটে যাতায়াত করতে পারছে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যবসায়ীরা। নদী যথাযথভাবে খনন না হওয়ার অভিযোগ স্থানীয় কৃষকদেরও।

তারা বলেন, নদীটি খনন করা হলেও তা আবার ভরাট হয়ে যাওয়ায় এবার বোরো মৌসুমে হাওরাঞ্চলের অনেক জমি থেকে পানি অনেক দেরি করে নেমেছে। তাই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষির চাষাবাদ। নদীর প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নদীটি আবারো খননের বিকল্প নেই। অতি দ্রুত নদীটি পুনঃখননের ব্যবস্থা করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড এমনটাই দাবি সর্বসাধারণের।

খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, বাণিজ্যিক ও কৃষকদের স্বার্থ রক্ষায় নদীটি গতবার খনন করা হলেও খননের উচ্ছিষ্ট অংশ পাড়ে রাখায় তা বর্ষায় আবার নদীতে ফিরে এসে নদীটি ভরাট হয়ে গিয়েছে। এমতাবস্থায় নদীটি পুনঃখনন জরুরি।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত বলেন, নদীটিতে পলি জমে কিছু অংশ ভরাট হয়ে গিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়া হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন