ঢাকা | বুধবার
১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিপাকে লিটল ম্যাগ

বিপাকে লিটল ম্যাগ

অমর একুশে বইমেলা

  • লেখকরা আসতে চায় বৃহৎ পরিসরে

এবারের বইমেলা শেষ হবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার। করোনার কারনে মেলা নিয়ে হালকা সংশয় থাকলেও শেষ পর্যন্ত খুশি লেখক, প্রকাশকরা। তবে ব্যতিক্রমীধর্মী লিটল ম্যাগ বা ম্যাগাজিনের হয়নি কোনো পরিবর্তন। এখানে শুরু থেকেই কম ছিল পাঠক ও দর্শনার্থীদের আগমন। শেষ পর্যন্তও যার রুপের কোনো পরিবর্তন হয় নি। এ কারনে অনেক লেখক ভাবছেন ভিন্ন পথের কথা। আগ্রহ প্রকাশ করছেন স্বনামধন্য প্রকাশনী গুলোতে নিজের লেখা প্রকাশ করানোর।

বাংলা একাডেমি আয়োজিত বইমেলায় গত দেড় দশক ধরে স্থান করে নিয়েছে এ লিটল ম্যাগ চত্বর। যার বর্তমান বরাদ্দ হয়েছে মেলার মূল অংশ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চের সামনে।  বিজ্ঞান বিষয়ে চলমান ধারাকে চ্যালেঞ্জ করে ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তাধারা ও মতামত ব্যক্ত করার মুদ্রিত বাহনকে বলা হয় লিটল ম্যাগ বা ম্যাগাজিন। উনিশ শতকের প্রথমার্ধ থেকে ইউরোপ-আমেরিকায় লিটল ম্যাগাজিনের যাত্রা শুরু। এ ম্যাগাজিন অনেকটা অনিয়মিত এবং অবাণিজ্যিক। লিটল ম্যাগাজিন প্রতিনিধিত্ব করে একটি ছোট সমমনা নব্য গোষ্ঠীর যার চিন্তা-ভাবনা-দর্শন চলমান ধারা থেকে ভিন্ন এবং অভূতপূর্ব। তবে বর্তমানে কমেছে এ ধারার চিন্তা-ভাবনার মানুষজন। আগের চেয়ে যেমন কমেছে লেখকের সংখ্যা তেমনি কমেছে পাঠক-পাঠিকার সংখ্যা। লিটল ম্যাগের অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ লেখক এখন অনলাইন পোর্টালসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি করছেন। যার ফলে কমে এসেছে লিটল ম্যাগের পরিসরও। বাংলা একাডেমির তথ্য মতে এবারের বইমেলায় লিটল ম্যাগ চত্ত্বরে মোট ১২৭টি স্টল রয়েছে। যার মধ্যে দেখা যায়, কয়েক বছর ধরে কোনো নতুন প্রচ্ছদ প্রকাশ করতে পারেনি অনেক স্টল। পুরাতন সংগ্রহ নিয়েই বসেছে বইমেলায়। এ কারণে লিটল ম্যাগকে নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই পাঠক ও দর্শনার্থীদের। এতে লিটল ম্যাগে নিয়মিত বই প্রকাশ হওয়ার পরও সেরকমভাবে পাঠকদের সামনে আসতে পারেনি অনেক লেখক। এ বিষয় কথা হয় বয়োজ্যেষ্ঠ কয়েকজন লেখকের সঙ্গে। তাঁরাও জানায় লিটল ম্যাগের সংকটের কথা।

এবছর কাব্য গ্রন্থ ‘কাঁচের ভালোবাসা’ এবং গল্পগ্রন্থ ‘বিষন্ন তাঁরারা’ মেলায় এসেছে নাজমুন নাহার লাডলীর। প্রকাশনা করেছেন লিটল ম্যাগের ইচ্ছে স্বপ্ন প্রকাশনী। এছাড়াও তিনি সম্পাদনা করেছেন দুটি কাব্য গ্রন্থ  ‘গ্রন্থ চেতনা’,  ‘ফাগুন ঝড়া রোদ্দুর’ এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক ‘একাত্তরের বাংলা’।

তিনি জানান, লিটল ম্যাগের স্টলগুলো ছোট হওয়ায় পাঠকরা আসেন না। তবে স্টলগুলোর আকার আর একটু বৃহৎ হলে পাঠকরা নিয়মিত আসবেন বলে তিনি মনে করেন। আজকে আমাদের সমাজের প্রতিষ্ঠিত অধিকাংশ লেখকরাই এ লিটল ম্যাগ থেকেই তৈরি হয়েছে। তবে বর্তমানে লিটল ম্যাগের স্টলগুলো ছোট হওয়ার অনেক ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছে। আমি চাই এ স্টলগুলো বৃহৎ পরিসরে আসুক। এসময় তিনি আরো জানান, গত বছর মম প্রকাশনী থেকে বীরঙ্গনাদের মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী জীবনের বাস্তব রুপ নিয়ে রচিত হয়েছে ‘আহত মুনিয়া’। আমি মুক্তিযুদ্ধ ও বীরাঙ্গনাদের নিয়ে নিয়মিত লিখছি। প্রতিবছর দুই-একটা বই বের করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।  মেলার ২৯তম দিনে মোড়ক উন্মোচন হয়েছে ৩৯টি বইয়ের। এ নিয়ে এবারের বইমেলায় মোট মোড়ক উন্মোচন হয়েছে  ৩ হাজার ১২৮টি বইয়ের।

সংবাদটি শেয়ার করুন