ঢাকা | শনিবার
২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত পাহাড়ি টিলা

সম্ভাবনার নতুনদিগন্ত পাহাড়ি টিলা
  • সিলেটের গোলাপগঞ্জে অব্যবহৃত ৫ শতাধিক টিলা
  • কর্মসংস্থানে অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা

সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ৫শতাধিক টিলা অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে। কিছু টিলায় আনারস চাষ শুরু হলেও পতিত অবস্থায় পড়ে অছে শত শত টিলা। এসব টিলায় মাটি ও ফসল বিবেচনা করে চাষের আওতায় আনা গেলে উৎপাদন ব্যাপকভাবে বাড়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভমান হবে সিলেট অঞ্চল।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোলাপগঞ্জে সম্প্রতি টিলাভূমির একটি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এ জরিপ অনুযায়ী- উপজেলায় ৫ শতাধিক টিলা রয়েছে। যার ৯০ ভাগই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। কয়েকটি টিলায় আনারস চাষ হচ্ছে ৩ বছর থেকে। এছাড়া কিছু টিলায় বিভিন্ন বনজ গাছ রোপণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট টিলাগুলো অনাবাদি অবস্থায় পড়ে রয়েছে। কৃষি বিভাগ সেই টিলাগুলো আবাদের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র আরও জানায়, গোলাপগঞ্জ উপজেলার মোট আয়োতন ২৭ হাজার ৮৪৪ হেক্টর। এর মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১৭ হাজার ৩৮৬ হেক্টর । উচু ভূমির পরিমাণ ৫ হাজার ৩০৫ হেক্টর। এসব উচু  জমির মধ্যে প্রায় ৫০০ টিলা ভূমি রয়েছে । যার মধ্যে কৃৃষি বিভাগের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় সম্প্রতি ২৫-৩০টি টিলা আনারস, কমলা, লেবু, মাল্টা, কমলা আবাদের আওতায় এসেছে। বাকি টিলাগুলো অনাবাদি অবস্থায় আছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন- এসব টিলায় কাঠাল, আনারস, গোল মরিচ, কাজু বাদাম কমলা, লেবুসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করা সম্ভব। আধুনিক পদ্ধতিতে ও পরিকল্পিত চাষের আওতায় আনা গেলে উৎপাদিত ফল স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের অন্যান্য জায়গায় সরবরাহ করা যাবে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে আর্থিক ও পুষ্টির চাহিদা উন্নয়নে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে গোলাপগঞ্জ উপজেলাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে অনাবাদি টিলায় ফসল উৎপাদন করতে সাধারণ মানুষকে আগ্রহী ও উদ্যোগী করতে বিভিন্ন ফসলের চারা, সার, ট্রেনিং ও  পরামর্শ প্রদানসহ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস।

স্থানীয়রা বলছেন- কৃষি বিভাগ অনাবদি টিলা খুঁজে বের করার খুব ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এসব টিলার মধ্য থেকে কয়েকটিতে ইদানিং আনারস, কমলা, লেবু ও মাল্টা চাষ করতে দেখা গেছে। গোলাপগঞ্জের টিলার মাটির গুণাগুণ পরীক্ষা করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষের আওতায় আনলে উৎপাদন বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে এবং  অনেকের নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি সিলেটের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রাখবে টিলার সম্ভাবনাময় চাষাবাদ।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান বলেন, ফসল উৎপাদনে গোলাপগঞ্জ উপজেলা একটি সম্ভাবনাময় এলাকা। দীর্ঘদিন থেকে এ অঞ্চলে শত শত টিলা অনাবাদি অবস্থায় পড়ে আছে। আমরা কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত ৩০/৪০ টিলা আবাদের আওতায় এসেছে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কমলা, লেবু, মাল্টাসহ বিভিন্ন রকম ফলের চারা দিয়েছি। এখানের সব টিলা আবাদের আওতায় আনা গেলে এ অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা যাবে। পাশাপাশি পর্যটনেরও বিরাট সুযোগ সৃষ্টি হবে এখানে।

সংবাদটি শেয়ার করুন