কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ী উপজেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া খরস্রোতা ধরলা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে চাষিরা প্রতি বছরই বোরো চাষাবাদ করে আসছে। সরেজমিনে দেখা যায়, ধরলার চরে জেগে উঠা পলিমাটিতে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ার স্বপ্ন বুনছে চরাঞ্চলের চাষিরা। চারিদিকে সবুজ ফসলেই ভরে গেছে ধরলার বুক। এ যেন এক সবুজের সমারোহ। সমারোহে বিমোহিত হয়ে অনেকেই ছুটে আসছেন শেখ হাসিনা ধরলা সেতুর পাড়ে। অথচ মাত্র একযুগ আগেও পানির প্রবাহতা ও প্রাণের স্পন্দন ছিল ধরলা নদীতে।
এ নদীর প্রবল স্রোতের কারণে আতঁকে উঠতো ধরলা পাড়ের হাজারও বাসিন্দা। ধরলা নদীতে এখন পানি না থাকায় প্রায় ছোট-বড় শতাধিক চরের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে জীববৈচিত্রের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। কৃষক ধরলা বুকে জেঁগে ওঠা চরে পলিমাটিতে বোরো চাষাবাদ করেছেন। ধরলা নদীর বুকে শতশত বিঘা জমিতে কৃষকরা বোরো ধান, ভুট্টার, গম, বাদাম, আলু চাষবাদ করে আসছেন। বছরে একবার ধরলার বুকে চাষাবাদ করে সাময়িকভাবে কৃষকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসলেও নদীতে নাব্যতা সংকট দেখা দেওয়ায় ইঞ্জিন চালিত নৌকা বা ডিঙ্গি নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহকারী জেলে পরিবারগুলো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। ধরলা নদীতে বোয়াল, কাতলা, রুই, টেংরা, কর্তি, ভেটকি, বৈরালীসহ নানান প্রজাতির মাছ শিকার করে তারা জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতো। তবে পানি প্রবাহ না থাকায় এসব মাছের দেখা পাচ্ছেনা জেলেরা।
ধরলা পাড়ের সোনাইকাজী এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী সকিনা বেগমসহ অনেকেই জানান, এক সময় এ ধরলা নদী আমাদের ঘর-বাড়ী, আবাদি জমি-জমাসহ সব কিছুই গিলে নিয়েছে। সেই ধরলা এখন শুকিয়ে যাচ্ছে। অনেকেই ধরলা আগ্রাসী রূপ দেখেছে। ধরলার তীব্র ভাঙনে অনেকেই নি:স্ব হয়েছেন। এখন তারা প্রতি বছর ধরলার বুকে জেগে উঠা চরে পলিমাটিতে ৩ থেকে ৪ বিঘা জমিতে বোরো চাষবাদ করছেন। বোরোর বাম্পার ফলনের স্বপ্নও দেখছেন। প্রতি বছর বোরো চাষে লাভবান হলেও এবছর ডিজেলও সারের দাম বেশি। ফলে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াছমিন জানান, গত বছরের চেয়ে এ বছর ধরলার নদীর চরে বোরো চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা ভালো ফলন পাবে।