নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভোলায় বন্ধ হচ্ছে না জাটকা ইলিশ নিধন ও বিক্রি। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত জেলা ও উপজেলার পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি ও বাজারে বিশেষ পাহারায় বিক্রি হচ্ছে জাটকা। স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতায় সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল দেশের ৬টি অভয়াশ্রমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ করে সরকার। তবে দিন-রাত অবৈধ জালে মাছ ধরছেন জেলেরা। সরকারের সকল প্রকার প্রশাসন হার মানছে স্ব স্ব এলাকার জেলে ও প্রভাবশালীদের কাছে। অভিযানে যে পরিমাণ অবৈধ জাল জব্দ হচ্ছে তা ১০ থেকে ১৫ শতাংশ।
প্রতিরোধকারী সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, এমন অপরাধ পুরোপুরি বন্ধ করা যাবে না। জাটকা ও মা ইলিশ ধরা থেকে শুরু করে পরিবহন, বাজারজাত ও বিক্রির সঙ্গে একশ্রেণির কর্মকর্তা ও প্রভাবশালীরা জড়িত। যা একমাত্র সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেই বন্ধ করা সম্ভব।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২২ সালে ১ মার্চ থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত জাল ফেলে মাছ ধরার অপরাধে ভোলা জেলায় মেঘনা-তেতুলিয়ায় অভিযান চালিয়ে সহস্রাধিক জেলেকে আটক ও শতাধিক মণ ইলিশ এবং সহস্রাধিক মিটার জাল জব্দ করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, পিছনে মানুষ না থাকলে মাছ ধরা সম্ভব নয়। তা রোধ করতে পারলেই সবকিছুর সমাধান হয়ে যায়। তবে পুরো বিষয়টি প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে থাকায়, কোনো উদ্যোগই সফল হয় না। প্রশাসনও অসহায়, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা নিষেধাজ্ঞার পক্ষে অবস্থান নেন না। কারণ জেলে দিয়ে মোটা অংকের টাকা আয় হয় তাদের। জেলেদের নিয়েও ভোটের রাজনীতি রয়েছে।
জানা গেছে, নিষিদ্ধ সময়ে একশ্রেণির প্রভাবশালী মহল সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে সাধারণ জেলেদের দিয়ে মাছ আহরণ করে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে। জেলেদের দাদন দিয়ে-নিষিদ্ধ সময়েও মাছ আহরণ করাচ্ছে। দাদন গ্রহীতা বাধ্য হয়েই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ আহরণ করছে। পাড়া, মহল্লা এবং বাজারে বিক্রিতেও প্রভাবশালীরা নিয়ন্ত্রন করছেন। ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়ায় যে পরিমাণ ইলিশ ডিম দেয়-তার মাত্র ১০ শতাংশ বাঁচলে প্রতি অর্থবছরে ১৫ থেকে ২০ লাখ টন ইলিশ উৎপাদন হওয়ার কথা। নৌ-পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, অপরাধীদের ক্ষমা করারও প্রবণতা রয়েছে। জরিমানা দিলে সাত খুন মাফ-আইনের এ ফাঁককে হাতিয়ার করেও জাটকা-মা ইলিশ ধরা অব্যাহত আছে। আর ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত-জেলা ও উপজেলর-পাড়া, মহল্লা, অলি-গলি ও বাজারে বিক্রি হচ্ছে জাটকা ইলিশ মাছ। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের খবর দিলেও তারা ধারে কাছে আসেননা।
মৎস্য কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন জানান, আমরা আমাদের কাজ করছি আর জেলেরা জেলেদের কাজ করছে। ২ মাসের নিষিদ্ধ সর্ম্পন্ন ভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়, তার পরেও চেষ্টা করছি-লাখ লাখ মিটার অবৈধ জালসহ মনের পর মন জাটকা-মা ইলিশ জব্দ করা হচ্ছে। আমরা নদীতে অভিযান চালাচ্ছি।