ঢাকা | বুধবার
১৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৭৮ বছরেও হয়নি শ্রেণি উন্নয়ন

৭৮ বছরেও হয়নি শ্রেণি উন্নয়ন

রংপুর রেলস্টেশন

  • আন্দোলনেও মিলছে না সুফল

উত্তরের প্রাচীন নগরী রংপুর। রেলওয়ে শহর লালমনিরহাট থেকে এর দুরত্ব মাত্র ৪২ কিমি.। তবে কাছাকাছি হওয়ার পরও রংপুর রেলস্টেশন প্রতিষ্ঠার ৭৮ বছরেও হয়নি শ্রেণি উন্নয়ন। বি- গ্রেডের এ স্টেশনটিকে এ-গ্রেডে উন্নীত কারার দাবি সংশ্লিষ্টদের। রংপুরে বিভাগীয় নগরী, সিটি করপোরেশন, মেট্রোপলিটন পুলিশসহ অনেক কিছু থাকলেও রেল স্টেশনটি বৃটিশ আমলের সেই বি-গ্রেডের মর্যাদায় রয়ে গেছে। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে রয়েছে চাপাক্ষোভ। একমাত্র আন্ত:নগর ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেস ছাড়া আর কোনো দ্রুতগামী ট্রেন নেই এখানে। দীর্ঘদিন ধরে আনন্দোলন সংগ্রাম করেও কোনো সুফল মিলছে না। অধরাই থেকে যাচ্ছে রংপুরবাসীর স্বপ্ন।

রেল স্টেশন সূত্র জানায়, রংপুর রেল স্টেশন প্রতিষ্ঠা করা হয় ১৯৪৪ সালে। দেখতে দেখতে বৃটিশ ও পাকিস্তান আমল চলে গেছে। বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়েছে। সরকার আসে সরকার যায়। কিন্তু রংপুর রেল স্টেশনটিকে এ-গ্রেডে উন্নীত করার কোনো পদক্ষেপ কেউ হাতে নেয়নি। এতে জন্ম থেকেই রংপুর রেল স্টেশন বি-গ্রেডের রয়ে গেছে। এ স্টেশন দিয়ে সিঙ্গেল লাইনের ট্রেন চলাচল করে। রেল স্টেশেনের চারিদিকে কোনো বেস্টনি নেই। পূর্ব-পশ্চিম ও দক্ষিণ তিনদিকেই খোলা। বলা চলে তিনদিক অরক্ষিত। এতে রাত হলে স্টেশনের  আশ-পাশে অপরাধি বিশেষ করে নেশাখোরদের আড্ডা বসে।

প্রতিদিন এ রেলস্টেশন থেকে আন্তঃনগর রংপুর এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, বিরল কমিউটার, বুড়িমারী কমিউটার, দোলন চাঁপা এক্সপ্রেস, লোকাল এলআরসহ ৬ জোড়া ট্রেন বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে। রংপুর ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ঢাকায় যাতায়াত করে।  প্রতিদিন এ স্টেশন থেকে দেড় হাজারে বেশি যাত্রী দেশের বিভিন্নস্থানে চলাচল করে। এ স্টেশন থেকে রেল কর্তৃপক্ষ ভালো আয় করলেও গ্রেড বৈষম্য রয়ে গেছে।

জানা যায়, রংপুর রেল স্টেশনের পশ্চিমে বন্দর শ্যামপুর এবং পূর্ব দিকে মীরবাগ বাজার স্টেশনটি বি-গ্রেডের। কাগজে কলমে শ্যামপুর ও মীরবাগের সঙ্গে রংপুর স্টেশনের কোনো পার্থক্য নেই। কাউনিয়া, লালমনিরহাট এ গ্রেডের স্টেশন হলে রংপুর কেন এ গ্রেডের হবে না এমন প্রশ্ন এখন অনেকের।

রংপুর পৌরসভার প্রাক্তন পৌর চেয়ারম্যান সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী মো. জুননুন বলেন, রংপুর রেল স্টেশন এখনও বি-গ্রেডের, এটা ভাবতে অনেকের মত আমারও কষ্ট লাগে। বিভাগীয় নগরী হিসেবে রংপুরে অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। যা বর্তমান সরকার প্রশংসার দাবি রাখে।  তিনি বলেন,  বর্তমান সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রংপুরের পুত্রবধূ। তিনি রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজে নিয়েছেন। আশাকরি স্টেশনটি এ-গ্রেডে উন্নতি করণের বিষয়ে বর্তমান সরকার নজর দিবেন।

স্টেশনের একটি সূত্র জানিয়েছে, রংপুর রেল স্টেশনকে ঘিরে উন্নয়নের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। স্টেশনের দক্ষিণ দিকে নতুন একটি প্লাটফর্ম তৈরীর কাজ চলছে। এছাড়াও বেশ কিছু কাজ শুরু হওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

রংপুর রেল স্টেশনের সুপার শঙ্কর গাঙ্গুলি বলেন, রংপুর রেল স্টেশনের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুতই যাতে এ স্টেশনটিকে এ গ্রেডে উন্নীতকরন করা যায়।

জানতে চাইলে বিভাগীয় রেলওয়ে ম্যানেজার শাহ সুফি নুর মোহাম্মদ বলেন, অবকাঠামোগত কিছু সমস্যার কারণে এ স্টেশনটি বি-গ্রেডে রয়েছে। স্টেশনের বিভিন্ন অবকাঠামো নিমার্ণের কাজ চলছে। আগামী এক বছরের মধ্যেই এটি এ গ্রেডে উন্নীতকরন হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন