ঢাকা | রবিবার
২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাষির স্বপ্ন ‘কালোসোনা’

চাষির স্বপ্ন ‘কালোসোনা’
  • ১৬ কোটি টাকার বীজ বিক্রির প্রত্যাশা

দেশে পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে রাজবাড়ী জেলার অবস্থান। দেশে উৎপাদিত মোট পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ উৎপাদন হয় রাজবাড়ীতে। পেঁয়াজের আবাদের পাশাপাশি কদম পেঁয়াজ বীজের আবাদও হয়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে। পেঁয়াজ আবাদে যে পরিমাণ বীজ প্রয়োজন তার অধিকাংশ বীজ জেলাতেই উৎপাদিত হয়ে থাকে। উৎপাদিত এসব বীজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি হয়। দাম বেশি হওয়ায় পেঁয়াজের এ বীজকে চাষি ও কৃষি অধিদপ্তর ‘কালোসোনা’ বলে ডাকেন।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, রাজবাড়ী জেলায় চলতি মৌসুমে ২০২১-২২ বছরে ১৯৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের কদমের চাষাবাদ হয়েছে। যা গত চলরের তুলনায় ১৮ হেক্টর বেশি। স্বাভাবিক হারে উৎপাদন ধরা হলে ৮০ মেট্রিক টন বীজ উৎপাদন হবে জেলায়। প্রতি কেজি বীজ ২ হাজার টাকা কেজি দরে ৮০  মট্রিক টন বীজ ১৬ কোটি টাকায় বিক্রি হবে বলে আশা চাষিদের। এ বীজ আবাদ করে চাষিরা অন্যান্য ফসলের চাইতে অধিক পরিমাণে লাভবান হয়ে থাকেন।

জেলার সদর উপজেলা, পাংশা, বালিয়াকান্দি, কালুখালী ও গোয়ালন্দে পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়ে থাকে। এর মধ্যে জেলা সদর, কালুখালী উপজেলাতে কদমের আবাদ বেশি হয়ে থাকে। কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের গড়িয়ানা ও দামুকদিয়া গ্রামের ফসলী মাঠে গিয়ে দেখা যায়, পুরো মাঠজুড়ে শুধু হালি পেঁয়াজ ও কদম পেঁয়াজ বীজের আবাদ করেছেন চাষিরা। প্রতি বছরই এ মাঠে চাষিরা পেঁয়াজ বীজ আবাদ করেন।

জেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ বীজ আবাদ ও উৎপাদন এখানেই হয়ে থাকে। বেশি লাভের কারণে পেঁয়াজ ও বীজ ছাড়া অন্যকোন ফসলে তেমন একটা আগ্রহ দেখান না এখানকার চাষিরা । এক বিঘা জমিতে বীজ উৎপাদনে খরচ বাদে লক্ষাধিক টাকা লাভ হয় বলে চাষিরা অন্যান্য ফসলের চাইতে বীজের আবাদেই আগ্রহ বেশি প্রকাশ করেন।

গত বছর (২০২০-২০২১) ১৭৭ হেক্টর পেঁয়াজ বীজ আবাদ হলেও এবছর তা বেড়ে ১৯৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে। চলতি বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে ১৮ হেক্টর জমিতে বীজের আবাদ বেড়েছে।

কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের মঈনশাহ চাঁদপুর গ্রামের চাষি শামসুল সেখ বলেন, বিঘাপ্রতি বীজ, সার, কীটনাশক, মজুরী ও চাষাবাদসহ তাদের খরচ হয়েছে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমি থেকে দেড় মণ বীজ হয়ে থাকে। প্রতি কেজি বীজ ২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এস এম সহীদ নুর আকবর জানান, পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের ক্ষেত্রে রাজবাড়ী জেলা বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। গত বছর ১৭৭ হেক্টর পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছিল। এ বছর তা বেড়ে ১৯৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে। স্বাভাবিক হারে হেক্টর প্রতি দশমিক ৫ টন উৎপাদন ধরা হলে ৮০ টন বীজ উৎপাদন হবে জেলায়। বাজার দর স্বাভাবিক থাকলে রাজবাড়ীর চাষিরা ১৬ কোটি টাকার উৎপাদিত বীজ বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছি।

সংবাদটি শেয়ার করুন