বৃহস্পতিবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুবিধাভোগীরা ছাড়ছেন আশ্রয়নের ঘর

বিদ্যুৎ-পানি-রাস্তা সংকট
  • বিদ্যুৎ-পানি-রাস্তা সংকট

বিদ্যুৎ, পানি ও রাস্তাসহ নানামুখী সংকটে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ আশ্রয়ন প্রকল্পের বরাদ্দকৃত ঘরে বসবাস করতে পারছেন না সুবিধাভোগীরা। এতে দুঃস্থ, অসহায় মানুষের জন্য গ্রহণ করা সরকারের প্রশংসনীয় উদ্যোগের সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সুবিধাভোগীরা। সরকারি ঘর ছেড়ে চলে যাাচ্ছেন অনেক বসবাসকারী।

জানা যায়, সারাদেশে জমি আছে ঘর নেই অথবা জমিও নেই ঘরও নেই এমন দুঃস্থ ও অসহায় মানুষকে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় বসতঘর বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর কর্নেশনা এলাকায় ৪২টি পরিবারকে ঘর দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে ১০ জন প্রতিবন্ধি মানুষ রয়েছে।

সরেজমিনে জানা যায়, আশ্রয়ন প্রকল্পে যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া শতভাগ বিদ্যুৎতায়িত উপজেলা হওয়া সত্বেও আশ্রায়নের বেশির ভাগ ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকা ও সুপেয় পানি পানের জন্য টিউবওয়েল স্থাপিত না হওয়ায় একে একে আশ্রয়ন প্রকল্প ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন সুবিধাভোগী বাসিন্দারা। এ আশ্রয়ন প্রকল্পে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৪২ পরিবার হলেও বর্তমানে বসবাস করছেন মাত্র ১৮ পরিবার।

সরেজমিনে জানা যায়, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের চর কর্নেশনা এলাকায় ৪২ পরিবারকে ঘর দেওয়া হয় বছরখানেক আগে। বিভিন্ন সমস্যার কারণে এরই মধ্যে ২৪টি পরিবার চলে গেছে অন্যত্র। ঘরগুলো এখন তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে।

আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দা ছালেহা বেগম বলেন, এক সময় দৌলতদিয়া ইউনিয়নের কিয়ামউদ্দিন মোল্লার পাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলাম। স্বামী মারা যাবার পর শেষ সম্বল ভিটেমাটি সর্বনাশা পদ্মায় কেড়ে নেয়। আমার কোনো সন্তান নেই। অবশেষে আশ্রয় মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পে। ঘর মিলেছে, তবে মিলেনি বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার একটি টিউবওয়েল ও বিদ্যুৎ সংযোগ।

আরও পড়ুনঃ  পাবনায় ২৪ ঘন্টায় ৩২৯ জন হোম কোয়ারেন্টিনে

আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা লোকমান সরদার বলেন, বছরখানেক আগে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হলেও এখানে যোগাযোগের জন্য তৈরি করা হয়নি কোনো রাস্তা। ফাঁকা মাঠে ঘর তৈরি করে হস্তান্তর করা হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে বাজারে যেতে ৪০ টাকা নৌকা ভাড়া দিতে হয়। এমনকি আশ্রয়ন প্রকল্পের আশেপাশে নেই কোনো বিদ্যালয়।

খোদেজা বেগম নামে আরেকজন বলেন, প্রতিটি ঘরের পাশে টিউবওয়েলের পাইপ দেওয়া হলেও দেওয়া হয়নি উপরের অংশ। এমনকি একটি গরু ছাগল ও মুরগি পালন করবো সেই জায়গাও নেই। যে কারনে এখানে কেউ থাকতে চাচ্ছে না। আবার ১০জন প্রতিবন্ধিকে ঘর দেওয়া হয়েছে তারা রাস্তার অভাবে আসা যাওয়া করতে পারে না। যে কারণে তারা ঘরে তালা দিয়ে আগেই চলে গেছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজিজুল হক খান মামুন জানান, দৌলতদিয়ার আশ্রয়ন প্রকল্পে’র ১০জন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন প্রতিবন্ধী মানুষ আছেন। ওই স্থানে যাওয়ার কোন রাস্তা নেই। তাছাড়া খালের উপর একটি ব্রিজও প্রয়োজন। এ ব্যাপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ে সমস্যাগুলোর সমাধান হবে বলে আশা করছি।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন