ঢাকা | বুধবার
১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে রমেকে চালু হলো কিডনি ডায়ালাইসিস

অবশেষে রমেকে চালু হলো কিডনি ডায়ালাইসিস

রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে ফিরেছে স্বস্তি। এক সপ্তাহ বন্ধ থাকার পর এ কাজে ব্যবহার হওয়া বিকল যন্ত্রগুলো ঠিক করে গতকাল সোমবার থেকে সবগুলো দিয়ে রোগীদের ডায়ালাইসিস শুরু হয় পুরোদমে। এতে সেবাপ্রত্যাশীদের শঙ্কা দূর হয়েছে। বিভাগের আট জেলার মধ্যে সরকারিভাবে একমাত্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস করানো হয়। যার কারণে এ হাসপাতালে রোগীর চাপ সব সময় বেশি থাকে। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জন নির্ধারিত প্যাকেজ নেওয়া কিডনি রোগীর ডায়ালাইসিস করা হয়।

ডায়ালাইসিসের ১৮টি যন্ত্রের মধ্যে সাময়িকভাবে ১৩টি বিকল হয়ে পড়লে কাজ ব্যাহত হচ্ছিল। তবে দুই দিনের মাথায় টেকনিশিয়ানরা যন্ত্রগুলো সচল করতে সক্ষম হলে উত্তোরণ হয় দুরাবস্তার।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করে ডায়ালাইসিস চলা অবস্থায় ১৩টি যন্ত্র নষ্ট হয়ে পড়ে। এতে করে সচল থাকা বাকি ৫টি যন্ত্র দিয়ে সেবা কার্যক্রম চলে। এতে সেবা নিতে আসা রোগীরা দুর্ভোগে পড়েন। ডায়ালাইসিস যন্ত্রে বিশেষ পানির সঙ্গে রাসায়নিক ফ্লুইডের মিশ্রণে ত্রুটি হওয়ায় সাময়িকভাবে যন্ত্রগুলো বিকল হয়ে পড়েছিল। পরে দুই দিনে ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্রগুলো সচল করে তোলেন টেকনিশিয়ানরা। গতকাল থেকে সবগুলো যন্ত্র দিয়ে সেবা কার্যক্রম শুরু হয়।

ডায়ালাইসিস সেবা নেওয়া এক রোগীর স্বজন সেলিমে বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে রোগীকে ডায়ালাইসিসের জন্য হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম। পরে দুপুরে জানতে পারি যন্ত্রের ত্রুটি দেখা দিয়েছে। তাই ডায়ালাইসিস শুরু করতে দেরি হবে। সবাই খুব টেনশনে ছিলাম। আজ ডায়ালাইসিস করতে পারায় দুশ্চিন্তামুক্ত হয়েছি।

প্রতিদিন প্রতিটি যন্ত্রে দুই থেকে তিনজন রোগির ডায়ালাইসিস হয়ে থাকে। একজন রোগির সপ্তাহে দুই দিন করে ডায়ালাইসিস হয়। প্রতি ডায়ালাইসিসে খরচ হয় ৪শ’ টাকা। তবে বাইরে ডায়ালাইসিস করাতে গেলে ৩ হাজার টাকার বেশি লাগছে। এ ছাড়া প্রতিদিন সেবাপ্রত্যাশী আরও ১০ থেকে ১৫ জন সাধারণ রোগি সিরিয়ালে থাকেন।

নেফ্রোলজি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নেফ্রোলজি বিভাগে আগে ডায়ালাইসিস যন্ত্র ছিল ৩০টি, এর মধ্যে এখন সচল রয়েছে ১৮টি। বাকিগুলো বিকল হয়ে পড়ে আছে। ২০১০ সালে কিডনি রোগিদের জন্য ১০টি ডায়ালাইসিস যন্ত্র স্থাপন করা হয়। বাকি ৮টি ২০১৬ সালের। এসব যন্ত্রের ওয়ারেন্টির সময়সীমা তিন বছর আগেই পেরিয়ে গেছে। যার ফলে এখন কোনো সমস্যা দেখা দিলে মেরামত করে রোগিদের ডায়ালাইসিস করা হয়।

নেফ্রোলজি বিভাগের প্রধান মোবাশ্বের হোসেন বলেন, আপাতত যান্ত্রিক ত্রুটি দূর হয়েছে। সোমবার থেকে পুরোদমে কাজ চলেছে। বিভাগের চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার ঘাটতি ছিল না।

রমেক হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয় টেকনিশিয়ানদের চেষ্টায় ডায়ালাইসিস যন্ত্রগুলো সচল করা সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া দু-এক দিনের মধ্যে ঢাকা থেকে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান আনা হবে। তাঁরা এসে এসব যন্ত্র আবার দেখবেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন