ঢাকা | বৃহস্পতিবার
১৫ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১লা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জৈব পদ্ধতিতে লাভ বেশি

জৈব পদ্ধতিতে লাভ বেশি

সমতলে আগর চাষ

আগরগাছের বাগান করা সহজ, খরচ তুলনামূলক কম এবং লাভ অনেক বেশি। এক কেজি আগর আতরের দাম পাঁচ লাখ টাকার কাছাকাছি। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। আগরগাছের নির্যাস থেকে মূল্যবান সুগন্ধি ও তেল পাওয়া যায়। যা থেকে আতর, আগরবাতি, বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধিপণ্য তৈরি করা হয়। আগরগাছের কাঠ ওষুধ কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়

জৈব পদ্ধতিতে আগরগাছের নির্যাস সংগ্রহ করে লাভবান হচ্ছেন ঠাকুরগাঁওয়ের শরিফ বিন রব্বানী। তিনি দাবি করেছেন, এ পদ্ধতিতে রস সংগ্রহ করলে আগরের মান ঠিক থাকে। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের সমতল ভূমিতে প্রথম আগর চাষ করেছেন।

শরিফের বাড়ি সদর উপজেলার ইয়াকুবপুর গ্রামে। ২০১০ সালে শখের বশে সিলেট থেকে শতাধিক আগরের চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পাশে পরীক্ষামূলকভাবে আগরবাগান গড়ে তোলেন শরিফ। এখন তাঁর বাগানে দুই শতাধিক আগরগাছ আছে। আগর চাষ সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আগরগাছের চারা উৎপাদনও করছেন তিনি।

সাধারণত আগরের রস সংগ্রহের জন্য গাছে লোহার পেরেক মেরে ও ড্রিল করে ক্ষত তৈরি করে রাসায়নিক কীট ঢুকিয়ে ছত্রাক তৈরি করা হয়, যা ব্যয় সাপেক্ষ। শরিফ দাবি করেছেন, এ পদ্ধতিতে আগরের মান ঠিক থাকে না, রসে আয়রন ও রাসায়নিক মিশ্রণ পাওয়া যায়।

এদিকে শরিফ বিশেষ প্রক্রিয়ায় ছত্রাক তৈরি করেন। এরপর ওই ছত্রাক বাঁশের কাঠির মাধ্যমে কম ছিদ্র করে আগরগাছের ভেতর ঢুকিয়ে দেন, পরে এ ছত্রাকের বংশবৃদ্ধি যত হয়, ততই আগরের নির্যাস পাওয়া যায়। তাঁর পদ্ধতিতে আগরের রস সংগ্রহ করা হলে মান ঠিক থাকবে বলে তিনি দাবি করেছেন।

বাগান পরিদর্শনের সময় শরিফ বলেন, অন্যান্য গাছের তুলনায় আগরগাছের বাগান করা সহজ, খরচ তুলনামূলক কম এবং লাভ অনেক বেশি। এক কেজি আগর আতরের দাম পাঁচ লাখ টাকার কাছাকাছি। এটি একটি সম্ভাবনাময় ফসল। আগরগাছের নির্যাস থেকে মূল্যবান সুগন্ধি ও তেল পাওয়া যায়। যা থেকে আতর, আগরবাতি, বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধিপণ্য তৈরি করা হয়। আগরগাছের কাঠ ওষুধ কারখানার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়।

শরিফের আগর সংগ্রহের কাজে সহযোগিতা করছেন তাঁর স্ত্রী রোজিনা আকতার। তিনি বলেন, আগর ব্যবসায়ীরা যদি ন্যায্যমূল্যে আগর ক্রয় করাসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পান। তবে, আগর শিল্পের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে, পাশাপাশি দেশের সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়নের সহায়ক হবে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু হোসেন জানান, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে আগর আতরের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এতে সম্ভাবনাময় আগর চাষ করে বদলে যেতে পারে এ জেলার মানুষের ভাগ্য। আগর চাষে আগ্রহীদের কারিগরি সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

সংবাদটি শেয়ার করুন