- শিল্প-সাহিত্যকে সহযোগিতা করা হবে
- শিক্ষার্থীদের কাছে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে
আওয়ামী লীগ ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকায় দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে। এই সময়ে মানুষের জীবন মান পাল্টেছে, হতদারিদ্র্যতা কমেছে। শিক্ষা-দীক্ষার পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়ে উন্নতির ছোঁয়া গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: মহাজীবনের মহাপট” শীর্ষক স্ক্রলপেইন্টিং-এর প্রদর্শনীর উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ওপর ভিত্তি করে আঁকা স্ক্রলপেইন্টিং এর পক্ষকালব্যাপী প্রদর্শনীটি গতকাল রবিবার দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের নলিনী কান্ত ভট্টশালী গ্যালারিতে শুরু হয়। তিনি গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, শিশু-কিশোরদের সামনে দেশের বিজয় ও অর্জনের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। এতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবে। প্রকৃত ইতিহাস জানলে শিশু-কিশোররা যেমন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে, স্বার্থপরের মত নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত না থেকে দেশের মানুষের কল্যাণে কিছু করার একটা আগ্রহের সৃষ্টি হবে। একটা চেতনা আসবে। যেটা আমাদের জন্য খুবই দরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের মেধা, জ্ঞান, শৈল্পিক মন ও মনন বিকশিত হবে। তারা কে কোন ব্রান্ড পরবে বা ধন সম্পত্তির পেছনে কেবল ছুটে বেড়াবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারি বা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কেন আমরা উদযাপন করি, জাতির পিতার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের নির্মম নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড বা ’৭১ এ যেভাবে এদেশে গণহত্যা হয়েছে বা আমাদের সংগ্রাম-সে সময়ে যে সাহস নিয়ে নিরস্ত্র বাঙালি অস্ত্র তুলে নিয়ে যুদ্ধ করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। সেই বিজয়ের সঠিক ইতিহাস-এরকম বহু ঘটনা আমাদের জীবনে রয়েছে, যার সমন্ধে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে প্রজন্মের পর প্রজন্মের জানা উচিত।
তিনি বলেন, প্রকৃতি আমাদের এত সুন্দর একটা দেশ দিয়েছে সেখানে প্রাকৃতিকভাবেই সকলের মাঝে এই শৈল্পিক চেতনাটা রয়েছে। এর বিকাশটা দরকার ।
বঙ্গবন্ধুর বৈচিত্রময় ও বহুমাত্রিক জীবন তুলে ধরে এ স্ক্রল পেইন্টিং এঁকেছেন দেশের খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ। ১৫০ ফুট দীর্ঘ স্ক্রল পেইন্টিংটি বাংলাদেশে সম্পাদিত সর্ববৃহৎ পটভূমিতে জাতির পিতার জীবনভিত্তিক চিত্রকর্ম। চিত্রশিল্পীর ভাষায় মাটি থেকে তৈরি বার্নট অ্যাম্বার রং এর মাধ্যমে মাটি থেকে উঠে আসা ইতিহাসের এই মহানায়ককে চিত্রিত করেছেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন, কমিটিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। স্ক্রল পেইন্টিংটির শিল্পী শাহজাহান আহমেদ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। প্রদর্শনীর আয়োজন সহযোগী বিজ্ঞাপনী সংস্থা ‘মাত্রা’র পক্ষ থেকে ম্যানেজিং পার্টনার শিল্পী আফজাল হোসেন, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদের সভাপতি শিল্পী জামাল আহমেদ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে শিল্পীর তুলির আঁচড়ে আমাদের বাংলাদেশের সংগ্রাম থেকে অর্জনের যে ইতিহাস তা ফুটে উঠেছে। শুধু বর্ণমালা পড়েই নয় শিল্পির তুলিতেও মানুষ সেটা দেখতে এবং উপলদ্ধি করতে পারবে, জানতে ও শিখতে পারবে।
তিনি বলেন, আমাদের কবি, শিল্পি, সাহিত্যিক যে যেখানে আছেন তারা যে যে কাজ করে যাচ্ছেন আপনারা তা করে যাবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, জাতির পিতার কন্যা হিসেবে দেশের মানুষের কল্যাণে যা যা কাজ করার সেটা করে যাবো। আবার বাঙালি হিসেবে শিল্প, সাহিত্য বা সংস্কৃতির চর্চা যেন অব্যাহত থাকে সেজন্য যতটুকু সহযোগিতার দরকার, অবশ্যই তা করবো।