- ২১ বছরেও উদ্যোগ নেই
- এলাকাবাসীর দুর্ভোগ
আমি যখন যুবক ছিলেম, সেতুডা তহন অয়। এহন আমার মেলা বয়স। এত বছর খালি সেতুডা দেহেই গেলেম, কুনু কাজে লাগল না
পাবনার সুজানগর উপজেলার দুলাই ইউনিয়নের রামাকান্তপুর গ্রামে প্রায় ২২ বছর আগের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। তবে দুই পাশে সংযোগ সড়ক না থাকায় স্থানীয় এলাকাবাসী সেতুর সুফল পাচ্ছে না। পাশে ফসলের মাঠ। সরু রাস্তা নেমে গেছে সে মাঠে। এ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে একটি সেতু। দুই পাশ ফাঁকা। সেতুতে ওঠার জন্য নেই কোনো সংযোগ সড়ক।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট। সেতুর পাশে চলাচলের নিচু রাস্তা। এ রাস্তা দিয়েই মানুষ মাঠে যাওয়া-আসা করেছেন। রামাকান্তপুর গ্রামের আফতাব প্রাং (৪৫) নামের এক ব্যক্তি বলেন, আমি যখন যুবক ছিলেম, সেতুডা তহন অয়। এহন আমার মেলা বয়স। এত বছর খালি সেতুডা দেহেই গেলেম, কুনু কাজে লাগল না।
গ্রামবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজনার বিলবেষ্টিত গ্রামটি বৃষ্টির পানিতে ৬ থেকে ৭ মাস জলাবদ্ধ থাকে। এরপর পানি নেমে গেলে মাঠে ফসল আবাদ শুরু হয়। এ মাঠ থেকে ফসল আনার জন্য স্থানীয় কৃষকেরা একটি সড়ক নির্মাণের দাবী জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) ফাঁকা মাঠের মধ্যে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। তবে দীর্ঘ ২১ বছর পরেও সেতুটির কোনো সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। পরে স্থানীয় লোকজন মাঠে চলাচলের সুবিধার্থে সেতুর পাশ দিয়ে মাটি ফেলে একটি সরু রাস্তা তৈরি করে।
রামাকান্তপুর গ্রামের আনিস উদ্দিন বলেন, তাঁদের গ্রামসহ আশে-পাশের আরও ৩টি গ্রামের মানুষ সেতুর পাশের এ সরু রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন। বর্ষার সময় এ এলাকা ডুবে যায়। তখন নৌকা ব্যবহার করতে হয়। সে কারণে এ এলাকায় তাঁরা একটি সড়ক নির্মাণের দাবি জানান। তবে রাস্তার জন্য সেতু নির্মাণ করা হলেও সড়কটি আর হয়নি। ফলে সেতুটিও এলাকাবাসীর কোনো উপকারে আসেনি। আর সেতুটি অনেক উঁচু। এখানে সড়ক করতে হলে এ সেতু ভেঙে ফেলতে হবে, অথবা নিচু করে আরেকটা সেতু নির্মাণ করতে হবে।
এ বিষয়ে পাবনার সুজানগর উপজেলা প্রকৌশলী রাকিব হোসেন বলেন, সেতুটি অনেক বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। এ বিষয়ে তাঁর কিছু জানা নেই। তবে সেতুটি শীঘ্রই পরিদর্শন করা হবে। সংযোগ সড়ক করা গেলে, সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।