ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নেত্রকোনায় কমছে বনভূমি

নেত্রকোনায় কমছে বনভূমি

হুমকিতে বন ও পরিবেশ

নগরায়ন, শিল্পায়ন, কৃষির আধুনিকীকরণসহ বিভিন্ন কারণে প্রতিনিয়ত চলছে বৃক্ষনিধন। এতে পরিবেশ সঙ্কট বেড়েই চলেছে। বাড়ছে প্রকৃতির বৈরি আচরণ। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে একটি দেশের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন হলেও আমাদের দেশে এর পরিমান ৭ থেকে ৮ শতাংশ। আর নেত্রকোণায় এ বনভূমির পরিমান একদমই নগন্য। এর ফলে ভারসাম্য হারাচ্ছে প্রকৃতি, বেড়ে চলছে অসময়ে অনাবৃষ্টি, খরা, অতিবৃষ্টি, প্রচন্ড দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, বজ্রপাতের মত প্রাকৃতিক দুযোর্গ। এদিকে জেলা বনবিভাগের দাবি পর্যাপ্ত সরকারি জায়গা না পাওয়ায় বাড়ানো যাচ্ছেনা বনভূমির পরিমাণ। 

পাহাড়, সমতল ও হাওর এ তিন স্তর বিশিষ্ট বনভূমি রয়েছে নেত্রকোণায়। তবে দিন কি দিন নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে বর্তমানে সেই বনভূমির পরিমাণ নেমে এসেছে অতি নগন্যের কোঠায়। প্রায় ২৫ লাখ মানুষের এ জেলার আয়তন ২ হাজার ৮১০ বর্গকিলোমিটার বা ৬ লাখ ৯৪ হাজার ৭০ একর। এদিকে জেলা বনবিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী জেলায় মোট বনভূমির পরিমাণ মাত্র ১ হাজার ৯৭৫ একর। যা জেলার সর্বমোট আয়তনের (০.৩০) দশমিক ৩০শতাংশ। 

এ স্বল্প বনভূমি প্রাকৃতিক ভারসাম্য, জীব বৈচিত্র রক্ষা বা মানবচাহিদা মেটাতে একেবারেই অক্ষম। জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে মানুষের ঘরবাড়ি, চাষাবাদ ও শিল্পায়নের জন্য বন জঙ্গল কেটে প্রয়োজন মেটানো হচ্ছে। কিছু স্বার্থপর মানুষ বন-জঙ্গল উজাড় করছে। এতে পশুপাখি অন্ন ও বাসস্থান হারাচ্ছে এবং অন্য জীববৈচিত্র্য লোপ পাচ্ছে। পরিবেশ ভারসাম্য হারাচ্ছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা বাড়ছে। 

ফল-ফসল ও প্রাণহানি ঘটছে। জেলার সচেতন সমাজ মনে করছে, পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে প্রাকৃতিক বন রক্ষা করে এবং সামাজিক বনভূমির পরিমাণ বাড়ানোর পাশাপাশি খাস জমিতে, রাস্তার পাশে, নদীর চরে সরকারিভাবে বৃক্ষরোপন ও পরিচযার্র মাধ্যমে সামাজিক বনায়ন গড়ে তুলতে হবে। বনায়নে সামাজিক সক্রিয় আন্দোলন, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং বনভূমি রক্ষায় কঠোর আইন প্রনয়ণ এবং প্রয়োগের বিকল্প নেই। 

সৃষ্টির অপরূপ সৌন্দর্যলীলার মধ্যে বৃক্ষরাজি অন্যতম, যা ছাড়া প্রাণিকূলের জীবন-জীবিকার কোনো উপায় নেই। সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণিবৃক্ষের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল। এমতাবস্থায় বনভূমির উন্নয়ন ও সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এমনটাই দাবি জেলাবাসীর। নেত্রকোণা বন বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক হারুন অর রশীদ বলেন, জেলায় যতটুকু বনভূমি রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। পর্যাপ্ত খাস জমি না থাকায় বনায়ন করা সম্ভব হচ্ছে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন