ঢাকা | রবিবার
৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিআরইবি’র নীতির ব্যত্যয়, একই কর্মস্থলে দীর্ঘ ১৩ বছর পদায়ন

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)-এর আওতাধীন ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে টানা ১৩ বছর ধরে কর্মরত রয়েছেন লাইনম্যান গ্রেড-১ মো. জাহিদ হোসেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় অন্তর বদলি বাধ্যতামূলক হলেও, কীভাবে এত দীর্ঘ সময় ধরে তাকে অমানবিকভাবে একই কর্মস্থলে পদায়ন করে রাখা হয়েছে, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে।

সিরাজগঞ্জ জেলার সন্তান জাহিদ হোসেন,২০১২ সালে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে লাইনম্যান পদে যোগদান করেন জাহিদ। পরবর্তী সময়ে পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে তিনি লাইনম্যান গ্রেড-১ পদে কর্মরত আছেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও কর্মস্থল পরিবর্তন না হওয়ায় তার পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে তৈরি হয়েছে নানা সমস্যা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী নিজ জেলা ব্যতীত পার্শ্ববর্তী অন্য জেলায় যাওয়ার বিধান থাকলেও দীর্ঘ ১৩ বছরেও যেতে পারিনি জাহিদ হোসেন।

সংশ্লিষ্ট তথ্যসূত্রে জানা গেছে,জাহিদ হোসেনের নিজ জেলা সিরাজগঞ্জ,তিনি নিজে একাধিকবার তার জেলার পার্শ্ববর্তী জেলা,পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১/২ এবং নাটর ২ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে বদলি হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। কিন্তু তার কোনো আবেদনেই সাড়া দেয়নি বিআরইবি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কথা হয় জাহিদ হোসেনের সঙ্গে তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।” তার এই সংক্ষিপ্ত বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট হয়—কর্মস্থল পরিবর্তন না হওয়া তাকে কতটা মানসিক চাপে ফেলেছে। স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীরা মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে এই ‘বৈষম্যমূলক’ অবস্থান তুলে ধরতে সংবাদ প্রতিবেদন তৈরির উদ্যোগ নেন।

এবিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে বিআরইবি’র নির্বাহী পরিচালক ফকির শরীফ উদ্দিন আহমেদ বলেন,“যারা দীর্ঘ সময় ধরে একই কর্মস্থলে কর্মরত রয়েছেন,তাদের ধাপে ধাপে বদলি করা হচ্ছে। বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে এবং প্রক্রিয়া চলমান।”

ভোলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌঃ সুজিত কুমার বিশ্বাস বলেন,এক সমিতি থেকে অন্য সমিতিতে বদলি/পদায়ন বিআরইবি কর্তৃপক্ষের এক্তিয়ার আমাদের কিছু করার নেই। তবে বাস্তব পরিস্থিতি বলছে—এই ‘ধাপে ধাপে’ বদলি কার্যক্রম বাস্তবায়নে সুষ্পষ্ট নীতিগত প্রয়োগ এখনো দৃশ্যমান নয়।

সুশাসন ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতায় বিশ্বাসী সংশ্লিষ্টদের মতে,”একই স্থানে বছরের পর বছর কাউকে আটকে রাখার ঘটনা প্রশাসনিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। জাহিদ হোসেনের মতো আরও অনেক কর্মী হয়তো এমন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন—তাদের কথাও আলোচনায় আনা জরুরি। “অনতিবিলম্বে এ ধরনের দীর্ঘমেয়াদী পদায়নের বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংবাদটি শেয়ার করুন