ঢাকা | বুধবার
৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিচারহীনতার ১৪ বছর / কাঁটাতারে ঝুলছে ফেলানী হত্যামামলা

কাঁটাতারে ঝুলছে ফেলানী হত্যামামলা

৭ জানুয়ারি আজ। ফেলানী হত্যা মামলার বিচারহীনতার ১৪ বছর। ২০১১ সালের এই দিনে কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী খাতুনকে গুলি করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ)।

বিএসএফ এর ১৮১ ব্যাটালিয়ন চৌধুরীহাট ক্যাম্পের জওয়ান অমিয় ঘোষ এ হত্যাকান্ড ঘটায়। দীর্ঘ সাড়ে চার ঘন্টা কাঁটাতারে ঝুলে থাকে নির্মম হত্যার শিকার ফেলানীর মরদেহ। ভারতের কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলন্ত লাশের ছবি প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বিশ্ব গণমাধ্যমসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ভারত। এঘটনায় তোলপাড় শুরু হলে ২বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ আগষ্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিচারে ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আত্মস্বীকৃত খুনি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফ এর বিশেষ কোর্ট। রায়ে বলা হয়, ফেলানী হত্যায় অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আদালত পায়নি। রায়ের পরপরই মুক্তি পায় ফেলানীর ঘাতক।

হত্যাকারী অমিয় ঘোষকে খালাস দেওয়ার খবরে হতাশা প্রকাশ করে ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি এ রায় মানি না। ন্যায় বিচার চাই। বিএসএফ অমিয় ঘোষ আমার মেয়ের বাঁচার আকুতি না শুনে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করে। এতে ঘাতকের ফাঁসি হওয়া উচিৎ। অথচ ভারতের কোর্ট ঘাতক অমিয় ঘোষকে বেকসুর খালাস দিল। এ রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনঃবিচারের দাবি জানায় ফেলানীর বাবা।

এদিকে ফেলানী হত্যার একতরফা রায়ের পর বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়ার প্রেক্ষাপটে এবিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার আহবান জানান ঢাকায় ততকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার। এটি ছিল ফেলানী হত্যা বিচারের ‘প্রথম ধাপ’ বলে ধর্য ধরার পরামর্শ দেন হাইকমিশনের মুখপাত্র।

এরপর ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে সাক্ষ্য দেয় ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই পুনরায় খুনী অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় ভারতের আদালত। রায়ের পরে ওই বছরের ১৪ জুলাই সেদেশের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন করে। একই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। পরপর ৩ বছর শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০২০ সালের ১৮ মার্চ করোনা শুরুর আগে শুনানির দিন ধার্য হলেও শুনানি শুরু হয়নি আজ-অব্দি। বর্তমানে ছাত্র-জনতার সরকার থাকায় ন্যায় বিচারের প্রত্যাশা করছে ফেলানীর পরিবার।

সংবাদটি শেয়ার করুন