বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উদ্বুদ্ধ করতে সরকার নতুন বছরে ৫ শতাংশ হারে প্রণোদনা বাড়িয়েছে। এটি পহেলা জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। রেমিট্যান্সে সরকারি প্রণোদনার পরিমাণ বৃদ্ধিকে প্রবাসী বাংলাদেশীকর্মীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের উপহার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
শনিবার (১ জানুয়ারি) অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম প্রেরিত এক সংবাদে এ কথা জানা যায়।
জনমানুষের সার্বিক জীবনমান উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রবাসীদের প্রেরিত রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বিবেচনায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তাতে বলা হয়, বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমজীবী মানুষের কষ্টার্জিত বৈদেশিক আয় বৈধ উপায়ে দেশে প্রত্যাবাসন উৎসাহিত করার লক্ষ্যে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে সরকার কর্তৃক ২ শতাংশ প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের বিদ্যমান হার বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বর্ধিত এ হার চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ১ জানুয়ারি-২০২২ হতে কার্যকর হবে।
গতকাল এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি যখন পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলাম, তখন জরিপ করে দেখেছি মোট রেমিট্যান্সের ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধপথে, তথা হুন্ডির মাধ্যমে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসা উৎসাহিত করতে প্রণোদনা দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
তিনি জানান, বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসলে অর্থনীতি গতিশীল হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সের ওপর ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া হয়। এরপর থেকে রেমিট্যান্স ১৪ বিলিয়ন থেকে ১৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫ বিলিয়ন ডলার। এ বছর ২৬ বিলিয়ন ডলার আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, রেমিট্যান্সের টাকা দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানোর মাধ্যমে টাকা পাচার করা হয়, এক সাংবাদিক এমন প্রশ্ন করলে সরাসরি কোনো জবাব দেননি অর্থমন্ত্রী। বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে কোনো কিছু করা যায় না। যারা টাকা পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সরকার ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রেরিত রেমিট্যান্সের বিপরীতে প্রথমবারের মতো ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সরকারের এ নীতিসহায়তার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ প্রেরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৮ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২৪ দশমিক ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি।
আনন্দবাজার/ টি এস পি