- উফশী জাতে ফলন ভালো
- বাজারদর ও চাহিদা বেশি
- প্রশিক্ষণে সাফল্য আসছে
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে বিভিন্ন নদীর জেগে ওঠা চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতিমৌসুমে দর ভালো পাওয়ায় চাষির মুখে হাসি ফুটেছে। চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় হাইব্রিডজাতের টমেটোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
উপজেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কৃষক-কৃষানীরা টমেটোর গাছের পরিচর্যা করছেন। আবার অনেকে গাছের টমেটো তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অধিকলাভের আশায় প্রান্তিক চাষিরা আগাম হাইব্রিড জাতের টমেটোর চাষ করছেন। শীতমৌসুমে আগাম টমেটো চাষে নানামুখী ঝুঁকি থাকলেও উপজেলা কৃষিবিভাগের পরামর্শে চাষিরা টমেটোর চাষাবাদ করেছে। যেসকল চাষির নিজস্ব জমি-জমা নেই তারাও অন্যের জমি লিজ নিয়ে টমেটোর চাষাবাদ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছেন। এ বছর লাভজনক ফসল টমেটোর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দর থাকায় আগাম টমেটো বিক্রি করে কৃষকদের বদলে দিয়েছে নিজের ভাগ্যের চাকা। প্রতিদিন কুড়িগ্রাম জেলা শহরসহ পাশ্ববর্তী জেলা লালমনিরহাট থেকে ব্যবসায়ীরা ফুলবাড়ী উপজেলায় এসে প্রান্তিক চাষিদের কাছ থেকে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় প্রতি মণ টমেটো ক্রয় করছেন।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডল এলাকার টমেটোচাষি আনছারুল হক জানান, দেড়বিঘা জমিতে টমেটোর চাষ করেছি। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এ বছর টমেটোর কোনো ধরনের রোগবালাই হয়নি। ফলনও গত বছরের চেয়ে ভালই হয়েছে। চলতিবছর টমেটোর দর অনেকটা ভালো পেয়েছি। গত একমাস আগে বিক্রি শুরু করেছি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা মণ। বর্তমানে ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা মণ বিক্রি করেছি। এ যাবৎ ৪০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। এরকম বাজার দর থাকলে দেড়বিঘা জমির টমেটো ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব বলে জানান।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা গ্রামে টমেটো চাষি সন্তোষ চন্দ্র বর্মন জানান, গত বিশ বছর ধরে দুইবিঘা জমিতে টমেটোর চাষ করেছেন। একবিঘা জমিতে টমেটোর চাষাবাদ করতে খরচ হয় ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। ভালো ফলন ও দর ভালো থাকলে খরচ বাদে ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। সবমিলিয়ে চলতি বছর টমেটোর বাম্পার ফলন ও ভালো দর পাওয়া আমরা খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নিলুফা ইয়াছমিন জানান, চলতিবছর উপজেলায় প্রায় ৩০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি অফিসের পরামর্শ ও আবহাওয়া অনুকূল থাকায় চলতি বছর টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। ভালো দর থাকায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এছাড়াও টমেটো চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়ায় চলতি মৌসুমে যথেষ্ট সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
আনন্দবাজার/এম.আর