ঢাকা | মঙ্গলবার
৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইপিএস বেড়েছে ৫৯ ভাগ কোম্পানির

ইপিএস বেড়েছে ৫৯ ভাগ কোম্পানির
  • ৪০ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের ইপিএস কমেছে
  • ২৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠান লেকাসানে
  • আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ইপিএস বেড়েছে ৩৮০ শতাংশ
  • ইপিএস কমেছে জাহিন স্পিনিং

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও পুঁজিবাজারের কোম্পানিগুলো ভালোভাবেই ব্যবসা চালিয়ে আসছে। ব্যবসায়ের সুপরিকল্পনায় ৫৯ শতাংশ কোম্পানির কর্তৃপক্ষ করোনার নেতিবাচক ধাক্কা সামাল দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২০২২) প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) ৬২ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

গতকাল রবিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়। আগের অর্থবছরের (২০২০-২০২১) প্রথমার্ধ বা প্রথম ৬ মাস (জুলাই-ডিসেম্বর) তুলনায় চলতি অর্থবছরের (২০২১-২০২২) প্রথমার্ধ বা প্রথম ৬ মাসের (জুলাই-ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে এসব তথ্য পাওয়া যায়।

প্রকাশিত ৬২ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে, আগের অর্থবছরের প্রথমার্ধের তুলনায় চলতি অর্থবছরে প্রথমার্ধে ৩৬টি বা ৫৮ দশমিক ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে। একই সঙ্গে ২৫টি বা ৪০ দশমিক ৩২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার প্রতি আয় কমেছে। কিন্তু মুনাফা আগের মতো রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিকসের।

পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, শেয়ার ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ব্যবসা আয় সবচেয়ে বেশি হয়েছে। কোম্পানিটির তাদের ব্যবসায় নয়, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ মাধ্যমে অধিক লাভ করেছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে সক্রিয় এবং গেম্বলিংয়ের সঙ্গে জড়িত, এমন অভিযোগ রয়েছে। ফলে ব্যবসায় উন্নতি হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের। কোম্পানিটির ইপিএস বেড়েছে ৩৮০ শতাংশ। তাদের আর্থিক হিসেবে অপরিচালন আয় (শেয়ারব্যবসা) বৃদ্ধিকে উল্লেখ করেছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।

সবচেয়ে বেশি ইপিএস কমেছে জাহিন স্পিনিংয়ের। ইপিএস কমেছে ২ হাজার ৩০০ শতাংশ। ব্যবসা মন্দার কারন হিসেবে জাহিন স্পিনিং কর্তৃপক্ষ ডিএসইকে জানান, অগ্নিকান্ড, পূনর্নির্মাণ ও নতুন মেশিনারিজ স্থাপনের কারনে বিক্রি কমে গেছে। এছাড়া বিক্রিত পণ্যের ব্যয়ের হার বৃদ্ধি ও প্রশাসনিক ব্যয় বৃদ্ধির কারনে লোকসান গুণতে হয়েছে।

ইপিএস বৃদ্ধির ২য় অবস্থানে রয়েছে বেক্সিমকো। ইপিএস বেড়েছে ৩৫২ শতাংশ। ইপিএস বাড়ার ৩য় অবস্থানে এনভয় টেক্সটাইল। ইপিএস বেড়েছে ২৭০ শতাংশ। ৪র্থ অবস্থানে এএফসি এ্যাগ্রো। ইপিএস বেড়েছে ২৬৭ শতাংশ। ৫ম অবস্থানে ম্যাকসন স্পিনিং। ইপিএস বেড়েছে ২৪৫ শতাংশ।

এরপর দেশ গার্মেন্টস ২১৭ শতাংশ, বঙ্গজ ২০০ শতাংশ, মতিন স্পিনিং ১৬৩ শতাংশ, ইন্ট্র্যাকো রিফুয়েলিং ১৩১ শতাংশ, আইসিবি ১২৬ শতাংশ, বীচ হ্যাচারি ১২০ শতাংশ, হামিদ ফেব্রিকস ১১৯ শতাংশ, বিকন ফার্মা ১০৬ শতাংশ, মালেক স্পিনিং ৮৮ শতাংশ, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ ৬৭ শতাংশ, ইস্টার্ন কেবলস ৪৫ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমার ৪৪ শতাংশ, বেক্সিমকো ফার্মা ৪৪ শতাংশ, একটিভ ফাইন ৪০ শতাংশ, একমি ল্যাব ৩৮ শতাংশ, কে অ্যান্ড কিউ ৩৮ শতাংশ, জিপিএইচ ইস্পাত ৩৬ শতাংশ, মেট্রো স্পিনিং ৩৩ শতাংশ, ইভিন্স টেক্সটাইল ৩৩ শতাংশ, ইস্টার্ন হাউজিং ৩৩ শতাংশ, বার্জার পেইন্টস ২০ শতাংশ, অগ্নি সিস্টেমস ১৯ শতাংশ, রেনাটা ১৪ শতাংশ, লাভেলো আইসক্রিম ১০ শতাংশ, পাওয়ার গ্রীড ১০ শতাংশ, প্রাণ ৮ শতাংশ, রহিম টেক্সটাইল ৮ শতাংশ, পদ্মা অয়েল ৪ শতাংশ, এডিএন টেলিকম ৩ শতাংশ, জুট স্পিনার্স ৩ শতাংশ এবং রংপুর ফাউন্ড্রি ১ শতাংশ করে ইপিএস বেড়েছে।

ইপিএস কমায় ২য় অবস্থানে রয়েছে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড। ইপিএস কমেছে ১ হাজার ৬৩ শতাংশ। ৩য় অবস্থানে ন্যাশনাল টিউবস। ইপিএস কমেছে ২৮৩ শতাংশ। ৪র্থ অবস্থানে গ্লোবাল হেভী। ইপিএস কমেছে ২২৩ শতাংশ। ৫ম অবস্থানে আরগন ডেনিমস। ইপিএস কমেছে ১৭৫ শতাংশ। এরপর ডেল্টা স্পিনার্স ১৭১ শতাংশ রহিমা ফুড ১৩৮ শতাংশ, সায়হাম কটন ১০৫ শতাংশ, হাক্কানি পাল্প ১০০ শতাংশ, আফতাব অটো ৮১ শতাংশ, দুলামিয়া কটন ৭৬ শতাংশ, এসআলম কোল্ড রোল্ড ৬৮ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ৪৯ শতাংশ, এসকে ট্রিমস ৪৩ শতাংশ, নাভানা সিএনজি ৩৫ শতাংশ, আল-হাজ্ব টেক্সটাইল ৩৩ শতাংশ, বেঙ্গল উইন্ডোসর ২২ শতাংশ, সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজ ২১ শতাংশ, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর ১২ শতাংশ, এসোসিয়েটেড অক্সিজেন ১০ শতাংশ, শমরিতা হসপিটাল ৭ শতাংশ, সিলভা ফার্মা ৭ শতাংশ, ড্রাগণ সোয়েটার ৩ শতাংশ, এমবি ফার্মা ৩ শতাংশ এবং নাহি অ্যালুমিনিয়াম ১ শতাংশ করে ইপিএস কমেছে।

এছাড়া প্রকাশিত ৬২ কোম্পানির মধ্যে ১৫টি বা ২৪ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের লেকাসান হয়েছে। লোকসানে আসা কোম্পানিগুলো হলো- ইস্টার্ন কেবলস, ইভিন্স টেক্সটাইল, জুট স্পিনার্স, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, দুলামিয়া কটন, আফতাব অটো, হাক্কানি পাল্প, সায়হাম কটন, রহিমা ফুড, ডেল্টা স্পিনার্স, আরগন ডেনিমস, গ্লোবাল হেভী কেমিক্যাল, ন্যাশনাল টিউবস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, জাহিন স্পিনিং।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন