মঙ্গলবার, ১০ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবজিতে স্বস্তি মিললেও লাফিয়ে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম

আজকের সবজি বাজারের ‍কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কোনো কারণ ছাড়াই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এদিকে পেঁয়াজ নিয়ে অস্বস্তি দীর্ঘ দিনের। আদা রসুনের দামও বাড়তি। অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে ময়দা, ভোজ্যতেল এবং চিনির দাম। অস্থিরতা আছে চালের বাজারেও।  ইলিশের কারণে মাছের বাজারেও বর্তমানে কিছুটা স্বস্তি বিরাজ করছে। গতকাল রাজধানী ঢাকার কয়েকটি খুচরা বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

জানা যায়, কার্গো বিমানযোগ পেঁয়াজ আসতে শুরু করায় পাইকারি বাজারে পণ্যটির দাম প্রতিদিন কমছে। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে এর প্রভাব তেমন পড়ছে না।  বিভিন্ন খুচরা বাজার এবং পাড়ার দোকানগুলোতে গতকালও দেশী পেঁয়াজ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর মিসর, তুরস্ক ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি দরে। কাওরানবাজারের পাইকারি বাজারে গতকাল দেশী পেঁয়াজ ১৫০ টাকা, মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১৪০ টাকা ও মিসরের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হয়েছে। তবে খুচরা বাজারে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে। বেশি দামে কেনা হয়েছে বলে লোকসান দিতে নারাজ খুচরা বিক্রেতারা।

বেড়েছে চালের দামও। রাজধানীর মৌলভীবাজারে পাইকারি মার্কেটে গতকাল প্রতি কেজি ভালো মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬২ টাকা। খুচরা বাজারে এসে একই চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। এক সপ্তাহ আগে খুচরা বাজারেই এ দাম ছিল ৫৮ থেকে ৫৯ টাকা। কয়েক দিন আগে মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে মোটা চালের কেজিপ্রতি দর ছিল ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, যা গতকাল বিক্রি হয় ৩৬ থেকে ৩৭ টাকা কেজিদরে। মাঝারি মানের বিআর-২৮ জাতের চালের দাম কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকায়। অথচ আড়তদার, মিল মালিক কিংবা খুচরো বিক্রেতা- সবাই একবাক্যে বলছেন এ সময়ে এভাবে চালের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই। খাদ্যমন্ত্রী সাধন মজুমদার নিজেও বলেছেন, দেশে চালের পর্যাপ্ত মজুত আছে এবং সরবরাহে কোনো ঘাটতি নেই।

আরও পড়ুনঃ  শিল্পনীতির আইনিভিত্তি চায় এফবিসিসিআই

বিভিন্ন পর্যায়ের ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক দিনে পাইকারি বাজারেই প্রতি কেজি চিনি ১০ থেকে ১২ টাকা, প্রতি কেজি ডালডা ১৫ থেকে ১৬ টাকা, প্রতি লিটার পামঅয়েল ১৬ থেকে ১৭ টাকা এবং প্রতি কেজি ময়দার দাম ১০ টাকা বেড়েছে। ১৮০ কেজি ভোজ্যতেলের ড্রামের দাম এতদিন ছিল ১০ হাজার থেকে ১০ হাজার ৫০০ টাকা। কয়েক দিন ধরে দুই থেকে তিন হাজার টাকা বাড়িয়ে পাইকারি বিক্রেতারা এক ড্রাম তেল বিক্রি করছেন ১৩ হাজার টাকাদরে। এ সময়ে ১৬ কেজির প্রতি কার্টন ডালডার দাম বেড়েছে অন্তত ২০০ টাকা। ১০৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এখন বিক্রি করা হচ্ছে ১২৫০ টাকায়। ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা চিনির দাম এতদিন ছিল ২১৫০ থেকে ২২০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ২৭৫০ টাকাদরে। পাইকারি বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে খুচরায় বেড়েছে আরো বেশি হারে।

এদিকে ইলিশের কারণে মাছের বাজারেও বর্তমানে কিছুটা স্বস্তি। খুচরা বাজারে গতকাল এক কেজি থেকে ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে। আর পিস বিক্রি হয় ১০০০ থেকে ১১০০ টাকার মধ্যে। ৮০০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি দরে। পিস হিসেবে বিক্রি হয় ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। বাজার ও মানভেদে প্রতি কেজি তেলাপিয়া ও পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। রুই ও কাতল মাছ বিক্রি হয় ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া পাবদা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ট্যাংরা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়। স্বস্তি দিচ্ছে না ছোট মাছও। কাচকি মাছ বিক্রি হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে।

Print Friendly, PDF & Email

সংবাদটি শেয়ার করুন