ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুটকি রপ্তানিতে লাভবান মৎস্যজীবীরা

পাবনার বৃহত্তর চলনবিল এলাকায় শুঁটকি মাছের ব্যবসায়ে অনেক মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতি ও জীবনযাত্রায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই বিলের শুঁটকি মাছ সুস্বাদু হওয়ায় দেশে-বিদেশে এর চাহিদা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে ভারত, পাকিস্তান, সৌদি আরব, আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের ২৫টি দেশে এ মাছ রফতানি হচ্ছে।

জেলার পাঁচটি উপজেলার খালবিল নদী-নালা থেকে দেশি কাঁচা মাছের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত ছোট মাছ প্রক্রিয়াজাত করে রোদে শুকিয়ে শুঁটকির চাহিদা পূরণ করছে স্থানীয় শুঁটকি মৎস্যজীবীরা। চলতি বছরের নভেম্বর মাস থেকে শুরু হওয়া এই শুঁটকি প্রক্রিয়ার কার্যক্রম আগামী বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত চলবে।

পাবনার সুজানগর, সাথিয়া, বেড়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১০টি স্থানে শুঁটকি মাছের চাতাল রয়েছে। মৌসুম ভিত্তিক এই ব্যবসার সঙ্গে হাজারেরও বেশি মানুষ জীবিকা নির্বাহ করে থাকে।

সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, এবার পাবনা অঞ্চল থেকে প্রায় ১০০ টন শুঁটকি মাছ রপ্তানি করা হবে। আর এই শুঁটকি মাছ প্রকারভেদে সর্বনিন্ম চার হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১৬ হাজার টাকা মণ দরে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহে একদিন করে প্রতিটি ট্রাকে ১০ টন করে শুঁটকি মাছ বাজার জাত করা হয়। প্রতি টন শুঁটকি মাছ প্রায় দুই লাখ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।

মাছের আড়ৎদার শুকুর উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ ২০ বছর ধরে সুজানগর মসজিদ পাড়ার বেশ কিছু মৎসজীবী পরিবার এই ব্যবসা করে আসছেন। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি কাঁচা মাছ আমদানি করে থাকি। এই শুঁটকি মাছের ব্যবসায়ীরা আমাদের আড়ৎ থেকে মাছ সংগ্রহ করে থাকে। এই কাঁচা মাছ বিক্রি করে আমরা যেমন লাভবান হচ্ছি আবার তারাও এ মাছ শুঁটকি করে বাজারে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।

শুঁটকি মাছ ব্যবসায়ী এখলাছ মাহমুদ বলেন, আমাদের কাছে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পাইকার ব্যবসায়ীরা আসে শুঁটকি মাছ কেনার জন্য। সিজেনাল এ ব্যবসায় প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষ এই কাজ করে থাকে। আমাদের এই অঞ্চলের শুঁটকি মাছ সৈয়দপুরে শুঁটকি মাছের আড়তে যায়। সেখান থেকে ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের মৎস্য ব্যবসায়ীরা তাদের চাহিদা অনুসারে মাছ সংগ্রহ করে। এবারে প্রায় ১০ কোটি টাকার শুঁটকি মাছ দেশসহ বিদেশে রপ্তানি করা হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আব্দুর রউফ জানান, গত বছর জেলায় পাঁচটি উপজেলা মিলিয়ে ১৬৭ মেট্রিক টন শুঁটকি করা হয়েছে। সরকারিভাবে তেমন কোনো সহযোগিতা নেই শুঁটকি মৎস্যজীবীদের জন্য। আগামীতে যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে সেখানে এই শুঁটকি মাছের ব্যবসায়ী ও চাষিদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই মাছ বিদেশে পাঠানো হয় কি না আমার জানা নেই। স্থানীয় মৎস্যজীবীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি সৈয়দপুর শুঁটকি মাছের আড়ৎ থেকে ভারতের কিছু মৎস্য ব্যবসায়ী মাছ কিনে থাকে। তবে সরকারিভাবে এর কোনো অনুমোদন নেই।

 

 

আনন্দবাজার/ইউএসএস

সংবাদটি শেয়ার করুন