ঢাকা | রবিবার
২০শে জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৫ই শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হাতাশ রাজবাড়ীর পানচাষিরা

হাতাশ রাজবাড়ীর পানচাষিরা
  • বিদেশে রফতানি বন্ধ-দরে ধস
  • পানে লোকসান, অন্যফসলে ঝুঁকছেন

পানচাষে উপযোগী রাজবাড়ীর মাটি। এখানে উৎপাদিত মিষ্টি পানের চাহিদা ব্যাপক। এতে এখানকার চাষিরা দিন দিন পান চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। বাড়তে থাকে পানের চাষ। তবে করোনা সংকটের কারণে বিদেশে পান রফতানি বন্ধ হয়ে পড়ায় পানের দর কমতে থাকে। এতে লোকসানে পড়েন চাষিরা। বর্তমানে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেক চাষি। অনেক চাষি পানের বরজভেঙ্গে অন্যফসল চাষে ঝুঁকছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলাতে ৮৮ হেক্টর জমিতে মিষ্টি পান ও সাচি পানের আবাদ হয়েছে। এখানে ৬৫৮ মিষ্টি পানের বরজ ও ১৫৬ সাচি পানের বরজসহ ৮১৪ বরজে পানের চাষ হয়। মিষ্টি পান চাষে উর্বরভূমি হিসেবে পরিচিত বালিয়াকান্দি উপজেলা। এখানকার মিষ্টি পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ৮ দেশে রফতানি করা হতো। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহজশর্তে ঋণের ব্যবস্থা করা হলে প্রতিবছর এখাত থেকে কোটি টাকা আয় করা যেতো।

পানচাষি গনেশ মিত্র বলেন, উপজেলার আড়কান্দি, বেতেঙ্গা, চরআড়কান্দি, ইলিশকোল, স্বর্প বেতেঙ্গা, খালকুলা, বালিয়াকান্দি, বহরপুর, যদুপুর এলাকায় পানের ব্যাপক আবাদ হয়। তাদের পূর্ব পুরুষরা আগে থেকে পানের চাষ করে আসছেন। পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য ধরে রাখতে তারাও পান চাষ করছেন। তবে এখন পানের দর একেবারেই কমে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। ৮০ পিস পান আগে ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হতো। সে পান এখন মাত্র ৪ থেকে ৫ টাকায় বিক্রি হয়। তবে বাজারে একেকটি পান কিনে খেতে গেলে ঠিকই ৫ টাকা দিয়েই কিনে খেতে হয়। তাহলে আমাদের অবস্থা কি আপনারাই বোঝেন।

বাবাকে পানের বরজে সাহায্য করতে আসা কলেজ ছাত্র সুজন মিত্র বলেন, এ অঞ্চলের সাচি ও মিষ্টি পান প্রচুর জন্মে। মিষ্টি পান রাজবাড়ী জেলাসহ পার্শ্ববর্তী জেলার চাহিদা মিটিয়ে ভারত, পাকিস্তান, ভুটান, মালদ্বীপ, শ্রীলংকা, নেপাল, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া রফতানি করা হতো। এতে বৈদেশিক মুদ্রা আসতো। তবে করোনার কারণে বিদেশে পান রফতানি বন্ধ। বাজারে পানের দর নেই। এ কারণে আমরা পান চাষ বাদ দিয়ে অন্য ফসল চাষে ঝুঁকছি।

পানচাষি কার্তিক রাহা ও পংকজ ইন্দ্র বলেন, অর্থকরি ফসল পান হলেও তারা কোনো সহযোগিতা পায় না। সরকারিভাবে তাদেরকে সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা করলে পান চাষকে আরো লাভজনক ও জনপ্রিয় করে তোলা সম্ভব।

উপজেলা কৃষি অফিসার আনোয়ার হোসেন বলেন, এখানকার মিষ্টি পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ৮ দেশে রফতানি করা হতো। এখন রফতানি বন্ধ রয়েছে। তবে পান রফতানির চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।

আনন্দবাজার/এম.আর

সংবাদটি শেয়ার করুন